মূলত পেশাদার ক্রিকেট খেলা শুরু করেন এইচএসসির পর থেকে। অনূর্ধ্ব-১৮ ক্রিকেট খেলা হয় তখন থেকেই
ফরিদপুরের গর্ব বাংলাদেশ জাতীয় দলের তরুণ ক্রিকেটার নাঈম শেখ। চার ভাইবোনের মধ্যে নাঈম শেখ দ্বিতীয়। তার ক্রিকেটার হয়ে ওঠা খুব বেশিদিনের ঘটনা নয়।
২০১৫ সালে স্থানীয় রিয়াজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার পর ফরিদপুর জুনিয়র ক্রিকেট কোচিং ক্লাবে ভর্তি হন নাঈম। ফরিদপুর জেলার হয়ে সর্বোচ্চ রান করার পর ঢাকা বিভাগের হয়ে খেলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। শুধু তাই নয়, ২০১৬ সালে চ্যালেঞ্জ কাপে অংশ নিয়ে টুর্নামেন্টের সেরা ব্যাটসম্যানও হন নাঈম।
এরপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। মূলত পেশাদার ক্রিকেট খেলা শুরু করেন এইচএসসির পর থেকে। অনূর্ধ্ব-১৮ ক্রিকেট খেলা হয় তখন থেকেই। এরপর ডাক পড়ে অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ৫ ম্যাচে এক ফিফটিসহ ১২২ রান করেন নাঈম শেখ। বিশ্বকাপ থেকে দেশে ফিরে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রূপগঞ্জের হয়ে ৫৫৬ রান করেন।
একই বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় ঢাকা মেট্রো ক্রিকেট দলের হয়ে। ২০১৯ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রূপগঞ্জকে রানার্র আপ করতে সাহায্য করেন নাঈম। ১৬ ম্যাচে ৩ সেঞ্চুরি আর ৫ ফিফটিতে লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮০৬ রান করেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে একটি ওয়ানডে ও ২২টি টি-২০ ম্যাচে অংশ নিয়ে দুই ফিফটিসহ ৫৭১ রান করেন নাঈম শেখ।
বর্তমানে জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য তরুণ এ ওপেনার সুযোগ পেয়েছেন এ মাসে আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে।
রবিবার রাতে বিশ্বকাপ খেলতে জাতীয় দলের সঙ্গের ঢাকা ত্যাগ করেন নাঈম। নাঈমকে নিয়ে বেশ আশাবাদী ক্রিকেটপ্রেমীরা। বিদেশের মাঠে খেলায় তিনি ভালো করবেন এমনটি আশা করছেন তার বাবা-মাসহ দেশবাসী।
নাঈমের ভাই নাদিম বলেন, “ছেলেবেলা থেকেই ক্রিকেট পাগল ছিল নাঈম। বাড়ির পাশের মহিম স্কুলের মাঠ, হিতৈষী স্কুল মাঠ, জিলা স্কুল মাঠ, হাই স্কুল মাঠসহ শহরের সব মাঠেই ক্রিকেট খেলেছে সে। কোথাও ক্রিকেট খেলা হলেই ডাক পড়ত নাঈমের।”
নাঈমের জাতীয় দলের ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পেছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি সেই কোচ মোখলেসুর রহমান বাবলু বলেন, “নাঈম ২০১৫ সালের প্রথম দিকে আমার কাছে আসে। আমি তাকে যথাসাধ্য চেষ্টা করে গড়ে তুলি। তার মধ্যে যে বিষয়টি ছিল সেটি হলো- তাকে যেভাবে শিখিয়ে দিতাম সে সেভাবেই অনুশীলন করে এগিয়ে থাকত। সে খুবই পরিশ্রমী, মেধাবী, বিশ্বস্ত, নম্র ও ভদ্রতায় ছিল অন্যতম। আমার চেষ্টা আর নাঈমের কঠোর পরিশ্রম তাকে আজ যোগ্যতার শিখরে নিয়ে গেছে বলে মনে করি।”
নাঈমের বাবা আবদুল আজিজ শেখ বলেন, “আমার তিন ছেলে নাদিম, নাঈম, সাঈম ও মেয়ে সায়মার মধ্যে নাঈম দ্বিতীয়। নাঈমের জন্ম ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকায়। ছেলেবেলায় স্থানীয় রিয়াজউদ্দিন স্কুলে লেখাপড়া শুরু করে। সেখান থেকেই এসএসসি পাশ করার পর ফরিদপুর মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় তাকে। ক্রিকেট পাগল নাঈম এইচএসসিতে ইংরেজিতে খারাপ রেজাল্ট করে।”
নাঈমের মা কেয়া বেগম (আলেয়া) বলেন, “আমার ছেলে বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপে ভালো খেলবে সেটাই প্রত্যাশা করি। নাঈমের পাশাপাশি তার ছোটভাই সাঈমও ক্রিকেট খেলায় বেশ পারদর্শী হয়ে উঠছে। সেও নাঈমের মতো একদিন ভালো করবে এটিই প্রত্যাশা।”
মতামত দিন