বর্ণবাদী এই রোষানলের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ইংল্যান্ডের কোচ, ফুটবল ফেডারেশন, পুলিশ ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী
রবিবার (১১ জুলাই) ইউরো ফাইনালে টাইব্রেকারে ইতালির বিপক্ষে পরাজিত হয় ইংল্যান্ড। টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডের হয়ে ব্যর্থ হন মার্কাস রাশফোর্ড, জেডোন সাঞ্চো এবং বুকায়ো সাকা। ফাইনালের পর থেকেই তাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে বর্ণবাদী ট্রল।
তবে এই ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির ফুটবল ফেডারেশন। এছাড়া, তদন্তও শুরু করেছে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ।
নির্ধারিত সময় শেষে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও ইউরোর ফাইনালে ফলাফল নিস্পত্তি না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটের ভাগ্য পরীক্ষায়। টাইব্রেকারকে মাথায় রেখেই অতিরিক্ত সময়ে বদলী হিসেবে মাঠে নামানো হয় রাশফোর্ড ও সাঞ্চোকে। এর আগে সাকোও নেমেছিলেন বদলী হিসেবেই। টাইব্রেকারে রাশফোর্ডের শট বাধা পায় পোস্টে। ইতালি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডোনারুমা সাঞ্চো আর সাকার নেয়া শট রুখে দিলে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলের জয়ে দ্বিতীয়বারের মত ইউরোপসেরা হওয়ার আনন্দে মাতে ইতালিয়ানরা। আর স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় মুষড়ে পড়ে ইংল্যান্ড খেলোয়াড় ও সমর্থকরা।
এরপর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উগ্র সমর্থকদের রোষানলের শিকার হন ঐ তিনজন। তবে ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, "পেনাল্টি কে নেবে এটা আমার সিদ্ধান্ত। অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে ব্যাক আউট করার ঘটনা নয়।”
এমনকি ফাইনাল হারের পরেও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও দাঁড়িয়েছেন খেলোয়াড়দের পাশেই। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, "খেলোয়াড়েরা বীরের মত সম্মানিত হওয়ার যোগ্য, বর্ণবাদী আক্রমণের নয়। যারা এ ধরণের কাজ করেছেন তাদের নিজেদেরকেই ধিক্কার দেয়া উচিত।"
খেলোয়াড়দের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইংল্যান্ড ফুটবল ফেডারেশন (এফএ) এক বিবৃতিতে বলে,"এই গ্রীষ্মে আমাদের খেলোয়াড়রা ইংল্যান্ডের জার্সির জন্য নিজেদের সর্বোচ্চ নিংড়ে দিয়েছে। অথচ আজ রাতের খেলা শেষে তারাই বৈষম্যমুলক আচরণের শিকার। আমরা আমাদের খেলোয়াড়দের পাশে আছি।"
আলাদা আরেকটি বিবৃতিতে এফএ বলে, "এফএ এই ধরণের বৈষম্যমুলক আচরণের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানায়। আমাদের দলের কিছু খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্য করে অনলাইনে বিদ্বেষমূলক কথা বলা হয়েছিল। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই যারা এই ধরণের আচরণ করে তারা আমাদের দলের সমর্থন করার জন্য স্বাগত নয়। এ ব্যাপারে দায়ীদের পক্ষে সর্বোচ্চ কঠোর শাস্তির আবেদন করার সময় আমরা খেলোয়াড়দের সমর্থনে যথাসাধ্য চেষ্টা করব"।
এদিকে, লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ টুইটারে বর্ণবাদী আক্রমণের ব্যাপারে তদন্ত পরিচালনা করার কথা জানিয়েছে। তারা বলেছে, "সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কিছু বর্ণবাদী পোস্টের ব্যাপারে আমরা জেনেছি। এই ধরণের আচরণ একদমই অগ্রহণযোগ্য। এসব সহ্য করা হবে না। এটা তদন্ত করা হচ্ছে।"
মতামত দিন