তিনি ব্যথা ও ভারসাম্যহীনতায় আক্রান্ত হয়ে ক্রমশ চলাচলের শক্তি হারিয়ে ফেলছেন।
কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা দাবি করেছেন, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে যে সেলে রাখা হয়েছে, সেখানে ইঁদুর-বিড়ালের উৎপাত আছে। তাদের দাবি, সেলের পরিবেশ খুবই খারাপ হবার কারণে তার মানসিক অবস্থাও ভালো নেই।
বিএনপি নেতাদেরপক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযোগ করা হয়েছে, জেলখানায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। দ্রুত তাকে উন্নত চিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য, নিউরো সার্জন ডা. সৈয়দ ওয়াহিদুর রহমান বলেছেন, ‘জেলখানায় খালেদা জিয়ার সেলে খুবই ভ্যাপসা, প্রচণ্ড গরম। একটা সমস্যা, সেখানে বেশি হচ্ছে, এটা আমি সবার কাছ থেকে জেনেছি। ওইখানে বিড়াল ও বড়-বড় ইঁদুর আছে।’
ওয়াহিদুর রহমান আরও বলেন, ‘মাঝখানে একরাতে তার (খালেদা জিয়ার) ঘরে একটি বিড়াল একটি ইঁদুরকে মেরে খেয়ে ফেলেছে। এতে তিনি রাতেই ভয় পেয়ে গেছেন। এতেই আপনি বুঝতে পারেন, তার মানসিক অবস্থা কেমন, শারীরিকভাবে তিনি কেমন আছেন।’
এদিকে, রবিবার রাতে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের (ডক্টরস অ্যাসোসিশেন অব বাংলাদেশ ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে এম আজিজুল হক ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, চিকিৎসা ও যথাযথ পরিচর্যার অভাবে একজন গুরুতর অসুস্থ রোগীর সাধারণ পরিণতিতে যা হওয়ার, খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। গত ৫ জুন মঙ্গলবার তিনি হঠাৎ করে অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যান। খালেদা জিয়া গত তিন সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছেন বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়।
ড্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিএনপির চেয়ারপারসনের অন্যান্য রোগ-উপসর্গের অবস্থারও অবনতি ঘটেছে। তিনি ব্যথা ও ভারসাম্যহীনতায় আক্রান্ত হয়ে ক্রমশ চলাচলের শক্তি হারিয়ে ফেলছেন। ফলে তিনি এখন আর নির্দিষ্ট সাক্ষাৎকার কক্ষে এসে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতেও পারছেন না।
বিবৃতিতে বলা হয়, খালেদা জিয়া পুষ্টিকর খাবারের অভাবে দুর্বল ও পুষ্টিহীন হয়ে পড়েছেন। এই তথ্যগুলো সম্প্রতি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আসা পারিবারিক সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সৌভাগ্যবশত এ যাত্রায় তিনি মস্তিষ্ক, ঊরুসন্ধি, মেরুদণ্ডের ভয়ঙ্কর আঘাত ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের মতো প্রাণঘাতী জটিলতা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন। ড্যাবের নেতারা খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন । রায় ঘোষণার পরপরই তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মতামত দিন