'গবেষণা সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং উন্নয়নের জন্য গবেষণার কোনো বিকল্প নেই'
দেশের তরুণ প্রতিবন্ধীদের চ্যালেঞ্জ, আশা এবং আকাঙ্ক্ষার অনুসন্ধান নিয়ে “ব্রিটিশ একাডেমি ইয়ুথ ফিউচার রিসার্চ” নামে একটি প্রকল্প কাজ শুরু করেছে। এটি শহরে এবং গ্রামের প্রতিবন্ধী বিভিন্ন তরুণদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবে।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) এই প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়।
এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন নবনিযুক্ত তরুণ সমকক্ষ (পিয়ার) গবেষকদের একটি দল যার কোনো না কোনো প্রতিবন্ধিতা রয়েছে। তাদেরকে প্রতিবন্ধী অন্তর্ভুক্তির জাতীয় নীতি গঠনে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করা হবে।
এ প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে সাইটসেভার্স এবং ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের যৌথভাবে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিসএবিলিটি প্রোটেকশন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রব্বানী এবং প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের পরিচালক প্রভাষ চন্দ্র রায়।
অনুষ্ঠানে সাইটসেভার্স বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অমৃতা রেজিনা রোজারিও বলেন, “আমরা এই নতুন গবেষণা প্রকল্পটি চালু করতে পেরে আনন্দিত। এটি বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী তরুণদের জীবিকা নির্বাহের অভিজ্ঞতা, আকাঙ্ক্ষা এবং চ্যালেঞ্জগুলো বোঝা এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা, এসডিজি ৮-সম্মানজনক কাজ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিবন্ধী তরুণদের নীতি সংলাপে (পলিসি ডায়লগ) অন্তর্ভুক্তিকরণ অনুসন্ধান করা হবে।”
অনুষ্ঠানের সভাপতি ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের অধ্যাপক ড. মালাবিকা সরকার বলেন, “এই গবেষণায় শুধু বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী তরুণদের অভিজ্ঞতা বোঝার ক্ষেত্রেই প্রকৃত পার্থক্য সৃষ্টি করবে না বরং সেইসব ব্যক্তিদের মাধ্যমে নেতৃত্ব দেওয়া হবে যারা এই অভিজ্ঞতাগুলো সবচেয়ে ভালো বোঝে। প্রতিবন্ধী তরুণ গবেষকদের নিযুক্ত করে, আমরা একটি সত্যিকারের অন্তর্দৃষ্টি পাওয়ার আশা করি এবং এটি তাদের জীবনকে প্রভাবিত করে এমন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে অবদান রাখতে সক্ষম করবে।”
যদিও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবুও ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্য, লিঙ্গ বৈষম্য, যুব বেকারত্ব এবং শ্রমবাজারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এখনও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রব্বানী বলেন, “গবেষণা সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং উন্নয়নের জন্য গবেষণার কোনো বিকল্প নেই।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, “এই গবেষণাটি জীবিকার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী যুবকদের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে সাহায্য করবে এবং সেই আকাঙ্ক্ষাগুলো বাস্তবায়নে বাধাগুলো নির্ধারণ করবে।”
এই গবেষণাটি কমিউনিটি-ভিত্তিক অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। প্রকল্পটি সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর এবং নরসিংদী জেলার প্রতিবন্ধী তরুণদের সহ-গবেষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে এবং তারা গবেষণার জন্য তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণের জন্য স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক গবেষকদের সঙ্গে কাজ করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এডিডি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর শফিকুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব, শবনম মুসতারি, ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি মনসুর আহমেদ চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা প্রমুখ।
মতামত দিন