এই দীর্ঘ যাত্রাকালীন, বাঘটি কয়েকটি নদীও অতিক্রম করেছে। যার মধ্যে কয়েকটি নদী এক কিলোমিটারের চেয়েও বেশি প্রশস্ত
“রেডিও-কলার” পরিহিত ভারতের সুন্দরবন অংশের একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার প্রায় ৪ মাস ধরে ১০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ভারতের বনবিভাগ কর্মীরা বাঘের গতিবিধির উপর নজর রাখার জন্যই রেডিও কলার পরিয়ে বাঘটির যাত্রাপথ পর্যবেক্ষণ করছিল।
সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া’র একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই দীর্ঘ যাত্রাকালীন, বাঘটি কয়েকটি নদীও অতিক্রম করেছে। যার মধ্যে কয়েকটি নদী এক কিলোমিটারের চেয়েও বেশি প্রশস্ত বলে জানান ভারতের বনবিভাগ কর্মীরা।
ভারতের প্রধান ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন ভি কে যাদবের মতে, গত বছরের ডিসেম্বরের শেষদিকে রেডিও কলার পরিহিত ওই পুরুষ বাঘটি বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশ সুন্দরবনেই অবস্থান করেছে।
তিনি বলেন, “হরিণভাঙ্গা থেকে বাসিরহাট রেঞ্জের অন্তর্গত হরিখালী শিবিরের সামনের দিকে ধরা বাঘটিকে ধরা হয়েছিল এবং পরে ২৭ ডিসেম্বর স্যাটেলাইট কলার পরিয়ে বাঘটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কয়েক দিন ভারতের এলাকায় ঘুরে বাঘটি তালপট্টি দ্বীপে প্রবেশ শুরু করে এবং বাংলাদেশের সুন্দরবন এবং ছোট হরিখালী, বড় হরিখালী এবং এমনকি রায়মঙ্গলের মতো নদীগুলো পেরিয়ে বাংলাদেশের সুন্দরবনে এসে পৌঁছায়।”
যাদবের মতে, ২৭ডিসেম্বর থেকে ১১ মে রেডিও কলার সংকেত দেওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বাঘটি ভারতের হরিণভাঙ্গা, খাতুয়াঝুরি এবং বাংলাদেশের তালপট্টি দ্বীপ অতিক্রম করে। তাছাড়া বাঘটির শেষ অবস্থান ছিল সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে।
এর আগে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা থেকে একটি বাঘিনীকে রেডিও-কোলার পরিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই বাঘটিও বঙ্গোপসাগরের প্রান্তে পৌঁছানোর জন্য চার মাসে ১০০ কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়েছিল।
এই গবেষণার বর্তমান লক্ষ্য মানুষের সাথে বাঘের সম্পর্ক ও বাঘের চিরস্থায়ী আস্তানা সম্পর্কে জানা বলে জানিয়েছেন তারা।
১১ মে কলার সিগন্যাল দেওয়া বন্ধ করার মানে বাঘটির মৃত্যু হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে যাদব বলেন, “গ্যাজেটে একটি মৃত্যুর সেন্সরও ছিল, যা বাঘের মৃত্যু ঘটলে সংকেত দেয়। কিন্তু তা হয়নি। আমরা কলার থেকে কোনো স্থিতিশীল সংকেতও পাইনি, যা বাঘ নিরাপদ রয়েছে তা নির্দেশ করে। সমস্ত সম্ভাবনার মধ্যে এটাই মনে হচ্ছে কলারটি বাঘের ঘাড় থেকে খুলে পড়ে গেছে। অথবা সুন্দরবনে, পানিতে লবণাক্ততার কারণে কলারের ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে।
তার মতে, এই বাঘটিকে ক্যামেরার ফাঁদে ক্লিক করা হয়নি। হতে পারে বাঘটা বাংলাদেশ সুন্দরবন থেকেই এসেছিল যখন আমরা তাকে ধরে কলার পড়িয়ে দেই।
মতামত দিন