ইরানের ইসলামী বিপ্লবোত্তর প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন আবুল হাসান বানিসাদর
১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর ইরানের প্রথম প্রেসিডেন্ট আবুলহাসান বানিসাদর দীর্ঘ অসুস্থ থাকার পর ৮৮ বছর বয়সে মারা গেছেন। শনিবার (৯ অক্টোবর) প্যারিসের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ১৯৮০ সালে বানিসাদরকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়েছিল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর আবুলহাসান বানিসাদর শনিবার দক্ষিণ-পূর্ব প্যারিসের স্যালপেট্রায়ার হাসপাতালে মারা গেছেন। বানিসাদর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের ১৬ মাস পর ১৯৮১ সালের জুনে ইরানের পার্লামেন্ট তাকে অভিশংসন করে। তখন তিনি দেশ ছেড়ে ফ্রান্সে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন।
আবুলহাসান বানিসাদরের পরিবারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৯ অক্টোবর প্যারিসের একটি হাসপাতালে মারা যান বানিসাদর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন।
১৯৬০ সালে বানিসাদর ইরানের রাজা শাহের বিরোধিতার জন্য জেলে গিয়েছিলেন। এরপর তিনি ফ্রান্সে পালিয়ে যান, যেখানে তিনি আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনীর দলে যোগদান করেছিলেন। বিপ্লবের সময় তারা একসঙ্গে তেহরানে ফিরে আসেন। এসময় বানিসাদর ইরানের অর্থমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং আলেমদের সহায়তায় প্রেসিডেন্ট হন। তিনি মার্কিন দূতাবাসের জিম্মি সংকট এবং ইরান-ইরাক যুদ্ধসহ প্রথম থেকেই বিপুল সমস্যার সম্মুখীন হন। পরবর্তীতে তিনি আলেমদের বিরোধী করা শুরু করেন এবং ক্ষমতার লড়াইয়ে পার্লামেন্টে তার অভিশংসন হয়। এর এক মাস পরে, তিনি ইরানি বিমান বাহিনীর বোয়িং ৭০৭ এ পালিয়ে যান এবং তাকে ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়। এরপর তিনি ইরানের জাতীয় প্রতিরোধ কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন কিন্তু তিন বছর পর ১৯৮৪ সালে সেটি ত্যাগ করেন।
১৯৩৩ সালের ২২ মার্চ ইরানের হামাদানে জন্মগ্রহণ করেন বানিসদর। তার বাবা নাসরুল্লাহ বানিসদর ছিলেন উচ্চ পর্যায়ের একজন শিয়া নেতা। তিনি ছিলেন লিবারেল ইসলামের সমর্থক। মাত্র ১৭ বছর বয়স থেকেই জাতীয়তাবাদী নেতা মোহাম্মদ মোসাদেদের ন্যাশনাল ফ্রন্ট অব ইরানের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি।
মতামত দিন