সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও আইএস পশ্চিম আফ্রিকা শাখার সদস্যরাও নিয়মিত এসব অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে
নাইজেরিয়ার দুটি রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্থানীয় সম্প্রদায়ের ওপর সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় কমপক্ষে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য হিন্দু এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা এবং বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজার এবং সোকোটো রাজ্যে ২৪ জনকে হত্যা ও অপহরণ করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। এসব সন্ত্রাসীরা নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্যাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শত শত স্কুল শিক্ষার্থী ও পর্যটকদের অপহরণে তারা কুখ্যাত।
কদুনা রাজ্যে মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ধর্মীয় সংঘাতের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা পরই ফের ওই হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ওই সংঘাতে প্রায় ৪০ জন নিহত হয়েছিলেন।
হামলাকারীরা মঙ্গলবার সকালে উত্তর মধ্য নাইজার রাজ্যে হামলা করে ১৪ জনকে হত্যা করে এবং সাতজন নারীকে অপহরণ করে। মুয়া লোকাল গভর্নমেন্ট এরিয়াতে (এলজিএ) এই হামলার ঘটনা ঘটে।
মুয়া এলজিএ’র চেয়ারম্যান গারবা মোহাম্মদ বলেন, “মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে সশস্ত্র ডাকাতরা লোকাল গভর্নমেন্ট এরিয়ার একটি আবাসিক এলাকায় হামলা চালায়। তারা বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং মানুষকে তাদের ঘরের ভেতরেই পুড়িয়ে হত্যা করে। এসময় সন্ত্রাসীরা বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। আগুন থেকে বাঁচতে যেসব মানুষ পালানোর চেষ্টা করেন, তাদেরকে ধরে গলাকেটে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।”
নাইজেরিয়ার পুলিশের মুখপাত্রও এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এর বেশি কিছু তিনি জানেন না বলেও দাবি করেছেন।
গারবা মোহাম্মদ আরও জানান, জঘন্য এই হামলার পর সন্ত্রাসীরা পার্শ্ববর্তী আরও দু’টি আবাসিক এলাকায় হামলা চালায়। এ সময় সেখানে তারা আরও ১৮ জন বাসিন্দাকে হত্যা করা হয়।
নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও আইএস (ইসলামিক স্টেট) পশ্চিম আফ্রিকা শাখার সদস্যরাও নিয়মিত এসব অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম বৃহৎ দেশ নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ডাকাতি, হত্যা, লুটপাট, স্কুলের শিক্ষার্থীদের বন্দি ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের মতো অপরাধ প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। এসব অপরাধ বন্ধে নাইজেরিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ পদেক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
মতামত দিন