১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান যখন প্রথমবার ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা স্টাইল করে চুল কাটা নিষিদ্ধ করেছিল। পাশাপাশি পুরুষের দাড়ি রাখার ব্যাপারে জোর দিয়েছিল
ইসলামি আইনের লঙ্ঘন উল্লেখ করে আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে দাড়ি “কামানো অথবা ছাঁটার” ব্যাপারে সেখানকার নরসুন্দরদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তালেবানরা। তারা এ বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে তালেবান বলেছে, “দাড়ি কামানো অথবা ছোট করে রাখা ইসলামি আইনের লঙ্ঘন। চুল ও দাড়ির ক্ষেত্রে ইসলামি আইন অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। এই ব্যাপারে কোনো ধরনের অভিযোগ করার অধিকার কারো নেই। এছাড়া নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারীদের কঠোর সাজা দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে।”
যদিও দাড়ি চেঁছে ফেলা অথবা বিভিন্ন স্টাইলে চুল-দাড়ি রাখা আফগানিস্তানে জনপ্রিয় হয়েছিল গত কয়েক বছরে।
এছাড়া, আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের কয়েকজন নরসুন্দর জানান, তারাও এমন একটি বার্তা পেয়েছেন। তালেবানরা প্রতিনিয়ত তাদের কাছে আসছেন এবং শাসিয়ে যাচ্ছেন যে, যারা আদেশ অমান্য করছে তাদের ধরার জন্য পুলিশ পাঠানো হবে। তবে তালেবানদের এমন আদেশে তারা পেশাগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
কাবুলের সবচেয়ে বড় হেয়ার-ড্রেসিং দোকানের মালিক জানিয়েছেন, তিনি একটি ফোন কল পেয়েছেন। নিজেকে সরকারি কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিয়ে তাকে একজন হুমকি দিয়েছেন “মার্কিন স্টাইল” অনুসরণ না করার জন্য।
তালেবানের ধর্মীয় পুলিশ জানিয়েছে, এ নিষেধ না মানলে শাস্তি পেতে হবে।
এদিকে তালেবানদের এমন আদেশ তাদের অতীত শাসনামলে ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। যদিও বার বার তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, এবারের শাসনামলে তারা আগের মতো অত কঠোর নিয়ম-কানুন রাখবে না। গত ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে। এরপর ৩১ আগস্ট সর্বশেষ মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের পর সরকার গঠন করে সংগঠনটি।
গত মাসে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর প্রতিপক্ষের ওপর তালেবানের প্রতিশোধের খবর পাওয়া যায়। শনিবার তালেবান সদস্যরা চার অভিযুক্ত অপহরণকারীকে গুলিতে হত্যা করে এবং মরদেহ হেরাত প্রদেশের রাস্তায় ঝুলিয়ে রাখা হয়।
এর আগে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান যখন প্রথমবার ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা স্টাইল করে চুল কাটা নিষিদ্ধ করেছিল। এছাড়া পুরুষের দাড়ি রাখার ব্যাপারে জোর দিয়েছিলে। এবার ক্ষমতা দখলের সময় সশস্ত্র সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তারা ধর্মীয় বিষয়ে কট্টরপন্থা অবলম্বন করবে না। কিন্তু তাদের কথা ও কাজে সম্পূর্ণ বৈপরীত্য দেখা গেছে।
মতামত দিন