আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে তার প্রভাব পাকিস্তানে পড়বে বলেও সতর্কবার্তা দেন তিনি
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আশঙ্কা, তালেবান যদি আফগানিস্তানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করতে না পারে, তাহলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিবিসি নেটওয়ার্কের বরাত দিয়ে বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ কথা জানায়।
মঙ্গলবার বিবিসি নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, “যদি তালেবানদের একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার না থাকে তাহলে ধীরে ধীরে দেশটির পরিস্থিতি গৃহযুদ্ধে রূপ নেবে। তা পাকিস্তানকেও প্রভাবিত করবে।”
বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে আফগানিস্তানকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এই সিদ্ধান্ত নির্ভর করছিল সেখানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার থাকবে কি-না তার ওপর।”
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে মানবিক ও শরণার্থী সংকটের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত সশস্ত্র গোষ্ঠী তাদের ঘাঁটি হিসেবে আফগানিস্তানকে ব্যবহার করতে পারে বলেও উদ্বিগ্ন তিনি।
ইতোমধ্যেই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন আফগান সরকারে পরিবর্তনের জন্য ইমরান খানের জানানো আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে তালেবান।
তালেবান নেতা মোহাম্মদ মোবিনের জানান, এই সংগঠনটি কাউকে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারের জন্য আহ্বান করার অধিকার দেয় না।
সোমবার আফগানিস্তানের আরিয়ানা টিভিকে তিনি বলেন, “আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। পাকিস্তানের মতো আমরাও আমাদের নিজস্ব শাসন ব্যবস্থা রাখার অধিকার রাখি।”
এছাড়া, বর্তমান শাসন ব্যবস্থাটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, সোমবার তালেবানের ডেপুটি তথ্যমন্ত্রী জাবিউল্লাহ মুজাহিদ টোলো নিউজকে জানান, এই সংগঠনগুলো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাওয়ার পরেই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার উদ্বেগের সমাধান করবে।
ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান সরকার বারবার বিশ্বব্যাপী তালেবানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিলের অভাবে আফগান কাঠামো ভেঙে পড়ার ঝুঁকি না থাকে।
তালেবানেরা আফগানিস্তানের সরকার দখলের এক মাস পরে আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিলে আনুমানিক ৮৫,৩৯৮ কোটি টাকারও বেশি জমা আছে।
স্কুল এবং হাসপাতালসহ আফগান সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার জন্য সেই তহবিলগুলি নিষ্ক্রিয় করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় যোগদানের সময়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “একদিকে আপনি একটি সংকট নিরসনে নতুন তহবিল সংগ্রহ করছেন আবার অন্যদিকে যাদের জন্যে এই অর্থ তাদেরকেই ব্যবহার করতে দিচ্ছেন না। আমি মনে করি সম্পদ বাজেয়াপ্তের সিদ্ধান্ত পরিস্থিতির উন্নতিতে ভূমিকা রাখছে না। আমি জোরালোভাবে আহ্বান জানাতে চাই যে, তারা যেন সেই তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে এবং বিকল্প চিন্তা করে।”
মতামত দিন