করোনাভাইরাস মহামারিতে কাজ ও থাকার জায়গা হারান তিনি। লকডাউন থাকায় নতুন কাজও পাচ্ছিলেন না
২৯ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার গ্রাফটন কারাগার থেকে পালিয়েছিলেন অপরাধী ডার্কো ডেসিক। এতদিন ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে করোনাভাইরাসের কারণে ঘোষিত লকডাউনে কাজ ও আশ্রয় হারিয়ে জীবন বাঁচাতে অবশেষে পুনরায় আইনের হাতে নিজেকে তুলে দিতে বাধ্য হলেন তিনি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডার্কো ডেসিকের বয়স এখন ৬৪। গাঁজাচাষের কারণে তাকে ১৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিল দেশটির আদালত। তিনি ১৯৯২ সালের ১ আগস্ট বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের গ্রাফটন কারাগার থেকে সিডনির উত্তরাঞ্চলীয় সমুদ্র সৈকতে অ্যাভালনে পালিয়ে যান। তিনি সিডনিতে এক ধনী পরিবারে কাজের লোক হিসেবে থাকতেন। এ সময় তিনি অতীতের পরিচয় গোপন রেখেছিলেন। এছাড়া করেননি কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স। এমনকি কোনোদিনই হাজির হননি কোনো চিকিৎসকের কাছে। এ কারণে তাকে শনাক্ত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তবে সম্প্রতি কোভিড প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সিডনিতে লকডাউন ঘোষণা করা হলে ধনী পরিবারটি তাকে কাজ থেকে বাদ দিয়ে দেয়। কাজ ও ঘর হারানোর পর তিনি সৈকতে ঘুমাতে বাধ্য হন। এক পর্যায়ে তিনি ভালো থাকার আশায় কারাগারে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আর তাই তিনি তার তিন দশক পালিয়ে বেড়ানো জীবনে ইতি টেনে পুনরায় কারাবাসে যান।
ডেসিক জানান, করোনাভাইরাসের কারণে আশ্রয় ও কাজ হারিয়েছেন তিনি। লকডাউন থাকায় কোনো কাজ পাচ্ছিলেন না। তাই বাধ্য হন আইনের হাতে নিজেকে সোপর্দ করতে।
পুলিশ জানিয়েছে, “রাতে তিনি সৈকতে ঘুমিয়েছিলেন। মাথার উপরে ছাদ থাকবে এবং খাবার পাবেন ভেবে আত্মসমর্পণ করেছেন।”
প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে কুখ্যাত জেলপলাতকদের একজন ডেসিক। তার পলাতক জীবনে অন্যদের নজরে পড়ার মতো যেকোনো পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতেন। একবার তাকে নিয়ে জনপ্রিয় টিভি সিরিজ “অস্ট্রেলিয়াস মোস্ট ওয়ান্টেড”-এ একটি অনুষ্ঠান করা হলে তিনি আরও সতর্ক হয়ে ওঠেন।
আত্মসমর্পণে পর তাকে ভিডিওর মাধ্যমে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর আবার তাকে আদালতে হাজির হতে হবে।
মতামত দিন