এই ভ্যারিয়েন্টটির বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনও কার্যকরী নয় বলে আশঙ্কা গবেষকদের
দক্ষিণ আফ্রিকাসহ কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন একটি ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় সংক্রামক রোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান এবং কোয়াজুলি-নাটাল নামে দেশটির একটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের যৌথ গবেষণায় বলা হয়, সি.১.২ নামের এই ভ্যারিয়েন্টটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে পাওয়া সি.১ ভ্যারিয়েন্টের পরিবর্তিত রূপ। এই ভ্যারিয়েন্টটি কোভিডের এ পর্যন্ত পাওয়া সবগুলো ধরনের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
জেরুজালেম টাইমস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের সৃষ্টি করা অন্যান্য ধরনগুলোর (ভিওসি) তুলনায় এই নতুন ধরনটি অনেক বেশি পরিবর্তিত হয়েছে। ফলে এই ভ্যারিয়েন্টটির বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনও কার্যকরী নয় বলে আশঙ্কা গবেষকদের।
আরও পড়ুন- করোনাভাইরাসের আরও একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত
গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতি মাসে সি.১.২ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের মে মাসে এই হার ০.২% থাজলেও জুন মাসে বেড়ে হয়েছে ১.৬% এবং জুলাইয়ে যা গিয়ে ঠেকেছে ২%-এ। যা এর আগে ছড়িয়ে পড়া বিটা ও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের হারের অনুরূপ।
গবেষণা অনুসারে, সি.১.২ ভ্যারিয়েন্টের মিউটেশন হার বছরে প্রায় ৪১.৮% যা অন্যান্য ভাইরাসের অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের মিউটেশনের তুলনায় দ্বিগুণ দ্রুত।
পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, কলকাতার সিএসআইআর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি’র ভাইরোলজিস্ট উপাসনা রায় এ বিষয়ে বলেন, সি.১.২ ভ্যারিয়েন্টটি ২০১৯ সালে চীনের উহানে শনাক্ত হওয়া মূল ভাইরাসটির থেকে অনেক আলাদা।
আরও পড়ুন- গবেষণা: ফাইজারের চেয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা বেশিদিন থাকে
উপাসনা রায় বলেন, এই ভ্যারিয়েন্টটি আরও সংক্রামক এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু স্পাইক প্রোটিনে অনেকগুলো মিউটেশন হয়েছে, তাই এর প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে রক্ষা পেতে এবং এভাবে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বব্যাপী টিকা অভিযানের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
গবেষকেরা জানান, সি.১.২ সিকোয়েন্সের স্পাইক অঞ্চলের প্রায় ৫২% মিউটেশনের আগে অন্যান্য ভিওসি এবং ভিওআই সিকোয়েন্সে দেখা গেছে।
সাধারণত স্পাইক প্রোটিন এস-কোভ-২ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মানুষের কোষে প্রবেশ করে।
আরও পড়ুন- ভ্যাকসিন নিলেন ছেলে, সনদ এলো মৃত বাবার নামে!
গবেষকরা বলেছেন, এই মিউটেশনগুলো একসঙ্গে ভাইরাসের অন্যান্য অংশে পরিবর্তনের পাশাপাশি ভাইরাসকে অ্যান্টিবডি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এবং মধ্যে ইতোমধ্যেই আলফা বা বিটা ভ্যারিয়েন্টের জন্য নির্মিত অ্যান্টিবডিও অন্তর্ভুক্ত।
উল্লেখ্য, সি.১.২ ভ্যারিয়েন্টটি দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হলেও এটি এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ড, চীন, ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, মরিশাস, নিউ জিল্যান্ড, পর্তুগাল এবং সুইজারল্যান্ডে পাওয়া গেছে।
মতামত দিন