কাবুলে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আত্মঘাতী হামলাকারী লক্ষ্য করে মার্কিন বাহিনী হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন তালেবানের মুখপাত্র
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আত্মঘাতী হামলাকারীকে লক্ষ্য করে মার্কিন বাহিনী হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন তালেবানের এক মুখপাত্র। কাবুল পুলিশের প্রধান রশিদ জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের উত্তর-পশ্চিমে রকেট হামলায় এক শিশু নিহত হয়েছে।
রবিবার (২৯ আগস্ট) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তালেবান মুখপাত্র বলেন, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) একজন আত্মঘাতী হামলাকারী গাড়িতে করে বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় মার্কিন বাহিনী তাকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার সন্দেহভাজন আইএস-কে জঙ্গিদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। তারা পশ্চিম ও তালেবান উভয়ের শত্রু এবং তারা বৃহস্পতিবার বিমানবন্দরের গেটের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলার জন্য দায়ী।
এর আগে বৃহস্পতিবার জোড়া বোমা হামলার পর আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আবারও বোমা হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছিলেন, “আফগান পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক। বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা প্রবল। মার্কিন কমান্ডাররা জানিয়েছেন যে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হামলার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। আমি তাদেরকে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে বলেছি”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিমানবন্দর ছাড়তে মার্কিনদের নির্দেশনাও দিয়েছিলেন। তার ঠিক কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এরকম ঘটনা সামনে এলো।
গত বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ভয়াবহ হামলায় ১৭০ জন মারা যান। আহত হন আরও ২০০ জন। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগানিস্তান শাখা-আইএসকেপি।
পেন্টাগন এবং আফগান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, নিহত ১০৩ জনের মধ্যে ৯০ জনই বেসামরিক নাগরিক। যার মধ্যে ১৩ জন মার্কিন সৈন্যও ছিল।
২০১১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৩০ জন মার্কিন কর্মীর মৃত্যুর পর এটিই আফগানিস্তানে মার্কিন নাগরিক হতাহতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগেই ২০০১ সালে আফগানিস্তানে আক্রমণ করার মূল কারণ অর্জন করেছিল, আল কায়েদা জঙ্গিদের নির্মূল করতে এবং ১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হামলার মতো ঘটনা আর যেন না ঘটে তা নিশ্চিত করতে।”
ধারণা করা হচ্ছে বাইডেনের এ ধরনের বক্তব্যের কারণেই হামলা চালিয়েছে গোষ্ঠীটি।
বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের সময় বিমানবন্দরের ভেতরে যাচ্ছিলেন এমন এক আফগান ব্যক্তি জানান, “এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল আমার কানের পর্দা ফেটে গেছে এবং আমি আমার শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলেছি। তারপরেই দেখলাম বাতাসে পলিথিনের ব্যাগ যেভাবে উড়ে বেড়ায় সেভাবেই উড়ছে লাশ এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ উড়ছে। আমি লাশ, শরীরের বিভিন্ন অংশ, বয়স্ক এবং আহত পুরুষ, নারী এবং শিশুদের দেখেছি। নর্দমার খালে পানি নয় রক্তে বয়ে যাচ্ছিল।”
মতামত দিন