কেউ কেউ বলছেন, শিশুটি যেহেতু মার্কিন পতাকাবাহী এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধন করা সামরিক বিমানে জন্মগ্রহণ করেছে সেজন্য তার মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত
আফগানিস্তান থেকে পালানোর সময় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ধারকারী সামরিক বিমানে সন্তান প্রসব করেন এক আফগান নারী। বিবিসি এবং সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান বাহিনী কাবুল দখলের পর হাজার হাজার আফগান নাগরিক দেশত্যাগ করতে যুক্তরাষ্ট্রগামী ফ্লাইটে উঠে। ওই নারী তাদেরই একজন।
টুটারে যুক্তরাষ্ট্রের এয়ার মবিলিটি কমান্ড জানিয়েছেন, ওই আফগান প্রসূতি বিশেষ ফ্লাইটে করে তার পরিবারের সাথে কাতার হয়ে জার্মানির রামস্টিন বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। পথে তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তার পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে বিমানের পাইলট উচ্চতা কমিয়ে আনেন যাতে উড়োজাহাজের ভেতরে বাতাসের চাপ বাড়িয়ে প্রসূতির জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়।
এয়ার মবিলিটি কমান্ডের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রামস্টিন বিমানবন্দরে বিমানটি অবতরণের পর মার্কিন সামরিক চিকিৎসা কর্মীরা ওই নারীকে সন্তান প্রসবে সহায়তা করেন। এরপর মা ও নবজাতক কন্যা শিশুকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তবে আকাশে জন্ম নেওয়া ওই শিশুর জাতীয়তা কি হবে তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। কেউ কেউ বলছেন, শিশুটি যেহেতু মার্কিন পতাকাবাহী এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধন করা সামরিক বিমানে জন্মগ্রহণ করেছে সেজন্য তার মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত।
আরেক পক্ষ বলছেন, বিমানটি যেহেতু জার্মানিতে অবতরণের পর শিশুটির ভূমিষ্ঠ হয়েছে, তাই জার্মান নাগরিকত্ব তার প্রাপ্য।
এভিয়েশন বিষয়ক এক পত্রিকার নিবন্ধে সামনার হাল নামের একজন লিখেছেন, বিমানপথে জন্ম নেওয়া শিশুর নাগরিকত্বের বিষয়টি একটু জটিল। স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী, শিশুর নাগরিকত্ব নির্ধারিত হয়ে থাকে তার মায়ের (এবং বাবার) নাগরিকত্ব অনুযায়ী, যাকে বলে 'জুস স্যাংগুইনিস' (রক্তের অধিকার)। কিন্তু কোন কোন দেশ তার সীমানার মধ্যে শিশুর জন্ম হলে তাকে নাগরিকত্ব দেয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে এই নিয়ম রয়েছে।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ফরেন অ্যাফেয়ার্স ম্যানুয়াল অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস, কনসুলেট, সামরিক বিমান কিংবা ঘাঁটি ইত্যাদিতে জন্ম নিলে শিশু মার্কিন নাগরিকত্বের অধিকারী হবে না। যদি না তার পিতা-মাতার অন্তত একজনের মার্কিন নাগরিকত্ব থাকে।
মতামত দিন