এখন পর্যন্ত ৫,২০০ জন মার্কিন নাগরিককে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে
আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে নিজ দেশের সেনাবাহিনীকে পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রের। কিন্তু পূর্বঘোষিত এ তারিখের পরেও দেশটিতে মার্কিন সেনাবাহিনীর অবস্থান করতে পারে। এমনটাই আভাস দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর পেছনে তার যুক্তি, আফগানিস্তানে আটকে থাকা মার্কিন নাগরিকদের কাবুল বিমানবন্দরে পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে তালেবান।
বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) এবিসি নিউজের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ কথা জানা যায়।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, এখন পর্যন্ত ৫,২০০ জন মার্কিন নাগরিককে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ২০০০ মার্কিন নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হয়। এখনও আফগানিস্তানে এখনও ১৫ হাজার মার্কিন নাগরিক আটকে আছেন।
বিমান চলাচল বাড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে বিদেশি সরকার পশ্চিমা নাগরিক এবং তাদের সঙ্গে কাজ করা আফগানদের দেশ ছাড়তে সাহায্য করছে।
মার্কিন নাগরিকদের পাশাপাশি মার্কিন সেনাবাহিনীর দোভাষী হিসেবে কাজ করা ৫০ থেকে ৬৫ হাজার আফগান নাগরিককে সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ওয়াশিংটন।
পেন্টাগন সাংবাদিকদের জানায়, দিনে ৯,০০০ মানুষ নিয়ে বিমান চলাচল বাড়ানোই এখন মূল লক্ষ্য।
প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মার্কিন সেনা কাবুলের কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাময়িক নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তালেবান যোদ্ধারা চেকপয়েন্টগুলো ঘিরে রেখেছে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক তালেবান কর্মকর্তা জানান, রবিবার থেকে বিমানবন্দর এবং এর আশেপাশে ১২ জন নিহত হয়েছে।
ভ্রমণের বৈধ কাগজপত্র ছাড়া আসা আফগানদের বিমানবন্দরে প্রবেশে তালেবানরা বাধা দিচ্ছে। কিন্তু বৈধ অনুমোদনধারীরাও বিমানবন্দরে প্রবেশে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) রাতে অস্ট্রেলিয়ার সামরিক বাহিনীর উচ্ছেদ বিমানের জন্য বিমানবন্দরে যেতে চাইলে এক আফগান দোভাষী পায়ে গুলিবিদ্ধ হন।
কিছু মার্কিন নাগরিক বিবিসির মার্কিন পার্টনার সিবিএস নিউজকে জানান, তারা নির্ধারিত উচ্ছেদ ফ্লাইটেও প্রবেশ করতে পারছেন না।
বুধবার (১৮ আগস্ট) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানায়, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের অনুমতি পেলে দেশীয় বিমান পরিবহনকারী এবং বেসামরিক পাইলটদের কাবুলে উচ্ছেদকরণ ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হবে।
আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়া বাইডেন নিজের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, “কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই কিভাবে আফগানিস্তান থেকে সবাইকে বের করে আনা সম্ভব তা আমার জানা নেই।”
এই সপ্তাহে ভাইরাল হওয়া ছবিগুলোতে দেখা গিয়েছিলো কবুলে ওড়ার সময়ে একটি আমেরিকান সামরিক বিমান নিচে ভূপতিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লেন, “এটি ৪-৫ দিন আগের!”
বুধবারের সাক্ষাৎকারে তালেবানদের বিজয়ী বিজয়ের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট আবারও আফগান সরকার এবং তার সামরিক বাহিনীকে দায়ী করেন।
গোয়েন্দা সূত্র বিবিসিকে জানায়, সেনা প্রত্যাহারের ঝুঁকিগুলি বাইডেন ভালোভাবে বুঝতে পারলেও তিনি তার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন।
মতামত দিন