দাবানলে গ্রিসের শত শত বাড়িঘর ও বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল পুড়ে ছাঁই হয়েছে। বাধ্য হয়ে বহু মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন
দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাবানল মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিটসোটাকিস। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
দাবানলে গ্রিসের শত শত বাড়িঘর ও বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল পুড়ে ছাঁই হয়েছে। বাধ্য হয়ে বহু মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। অনেককে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে বিপুল সম্পত্তি। শত শত অগ্নিনির্বাপণকর্মী আগুন নেভানোর কাজ করছেন।
টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেছেন, “মানুষ হিসেবে যা সম্ভব তার অনেক কিছুই হয়তো আমরা করেছি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট পদক্ষেপ নিতে পারিনি। ভয়াবহ এই দাবানলে যাদের ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে তাদের কষ্ট আমরা বুঝি। অভূতপূর্ব এক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা।”
এথেন্সের উত্তর-পূর্ব ইভিয়া দ্বীপ থেকে এখনও ঘন ধোঁয়া বের হচ্ছে। সপ্তাহব্যাপী দাবদাহের পর গ্রিসের বিভিন্ন অংশে তিন দশকে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। রেকর্ড তাপমাত্রায় দাবদাহ হয়েছে প্রলয়ঙ্কারী। বনভূমি পুড়ে ছাঁই হয়েছে। দাবানলে ছারখার হয়েছে অনেক বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শত শত বাসিন্দাকে আগুন থেকে বাঁচতে দ্বীপ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যদিও কেউ কেউ তাদের সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। দেশজুড়ে দাবানল ঠেকাতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, মিসরের মতো দেশ। স্পেন দাবানল ঠেকানোর জন্য বিমান পাঠিয়েছে। মোতায়েন রয়েছে সাড়ে পাঁচ শতাধিক দমকলকর্মী।
কিরিয়াকোস বলেন, “দাবানল মোকাবিলায় কোনো ধরনের ব্যর্থতা থাকলে তা চিহ্নিত করা হবে। অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের কর্মীরা এই ভয়ংকর শক্তির দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন। তবে দাবানলের শক্তি অগ্নিনির্বাপককর্মীদের শক্তির চেয়ে অনেক বেশি।”
এদিকে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আন্তসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) বৈশ্বিক উষ্ণায়নবিষয়ক একটি প্রতিবেদন সোমবার (৯ আগস্ট) প্রকাশ হয়েছে। এই প্রতিবেদন নিয়েও কথা বলেছেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী। দেশটির বর্তমান দুর্যোগের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন তিনি।
গ্রিসের নাগরিক সুরক্ষাবিষয়ক উপমন্ত্রী নিকোস হার্দালিয়াস বলেন, “ইভিয়ায় বড় ধরনের আগুন জ্বলছে দুই দিকে। একটি উত্তরে, অন্যটি দক্ষিণে। আগুন নেভাতে অগ্নিনির্বাপণকর্মীদের পাশাপাশি এক ডজনের বেশি উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার কাজ করছে।”
উল্লেখ্য, গ্রিসে কয়েক দশকের রেকর্ড সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও প্রবল বাতাসে গত জুলাইয়ের শেষ থেকে দেশটিতে মোট ৫৮০টি স্থানে এমন দাবানল দেখা দিয়েছে।
মতামত দিন