আফগানিস্তানে তালেবানদের সাম্প্রতিক দ্রুত উত্থানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীকে সহায়তাকারী দোভাষীদের জীবনের নিরাপত্তাঝুঁকির প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তান থেকে পরিবারসহ তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া দেশটির দোভাষীদের প্রথম দলটি যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে। পরিবারের সদস্যসহ এই দোভাষীদের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর কথা।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
আফগান দোভাষী ও তাদের পরিবারের যেসব সদস্যকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তারা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের "স্পেশাল ইমিগ্র্যান্ট ভিসাস" (এসআইভি) কার্যক্রম সম্পন্ন করতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির কাছে অবস্থিত ফোর্ট লি সামরিক ঘাঁটিতে থাকবেন। সেখানে আড়াই হাজার আফগানের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ২০০১ সালে শুরু হওয়া আফগান যুদ্ধে এই দোভাষীরা মার্কিন সরকার বা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করেছেন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আফগানিস্তানে তালেবানদের দ্রুত উত্থানে নিরাপত্তাঝুঁকির প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তান থেকে পরিবারসহ এই দোভাষীদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
"অপারেশন অ্যালাইস রিফিউজি" নামের প্রকল্পের মাধ্যমে এসব দোভাষীদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল হোয়াইট হাউস।
মার্কিন কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার আফগান এসআইভি পেয়েছেন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। আফগান যুদ্ধে দেশটির যেসব লোক মার্কিন সরকার বা বাহিনীকে সহায়তা করেছেন, তাদের এসআইভির সুবিধা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০০১ সালে ১১ সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানে কথিত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করে জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসন। তাদের সেই আগ্রাসনে যোগ দেয় ন্যাটো দেশগুলো। অভিযানে তালেবান সরকারের পতন ঘটে। তবে গত ২০ বছরেও দ্বন্দ্ব-সংঘাত, সহিংসতার অবসান না হওয়ায় দেশটিতে শান্তি ফেরেনি।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী তাদের সেনাদের প্রত্যাহারের কাজ জোরদার করার পর থেকেই তালেবানরা দেশটির একের পর এক এলাকা দখল করে দেশটির প্রায় অর্ধেক এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে জানা গেছে। বিদেশি সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হলেই তালেবানরা আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীকে সহায়তাকারী দেশটির দোভাষীসহ অনেক ব্যক্তির জীবনের ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
মতামত দিন