দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি এই প্রথম এত ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হলো
ভারী বৃষ্টিপাত এবং পশ্চিম ইউরোপে দুই দশকের মধ্যে সৃষ্ট নজিরবিহীন বন্যায় জার্মানিতে কমপক্ষে ৮১ জন এবং বেলজিয়ামে ৯ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) পানির প্রবাহে বেশ কয়েকটি ঘর ভেঙে পড়ার কারণে প্রায় ১ হাজার ৩০০ লোক নিখোঁজ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি ও বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনই এজন্যে দায়ী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি এই প্রথম এত ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হলো।
জার্মান দৈনিক বিল্ড এ বিপর্যয়কে "মৃত্যুর বন্যা" বলে আখ্যা দিয়েছে। জার্মানিতে এই আকস্মিক বন্যা বিষয়ে অনেক অঞ্চলে আগে থেকে পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানায়, বন্যাদুর্গত আরভেইলার অঞ্চলে এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ। উদ্ধারকার্যে ব্যবহৃত হেলিকপ্টারগুলো দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অনেক বাসিন্দারাই তখন তাদের বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছিলো।
বন্যার্ত এলাকায় মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক অকেজো হয়ে পড়ার সাথে সাথে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দুই লাখ বাড়িঘর। ফলে এসব বাসিন্দার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এই বন্যায় জার্মানির রাইনল্যান্ড-পালাটিনাটে ও নর্থ রাইন-ওয়েস্টফেলিয়া প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধু জার্মানিই না, অস্বাভাবিক ভারী বৃষ্টিপাতে ও বন্যায় তাদের প্রতিবেশী দেশ লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস এবং বেলজিয়ামও তলিয়ে গিয়েছে।
প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে দেশটির জরুরি সেবা, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রায় ১৫ হাজার সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
ওয়াশিংটন সফররত জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল বলেন, "আমি আশঙ্কা করছি আগামী দিনগুলোয় বিপর্যয় বড় আকার ধারণ করবে।" পাশাপাশি এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পূর্ণ সহযোগিতার ব্যাপারে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
মার্কির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষদের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের প্রতি শোক প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে জার্মানিতে ২০০২ সালের বন্যায় ২১ জনের মৃত্যু হয়।
মতামত দিন