সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারক রবার্ট রিড লিখিত রায়ে বলেন, 'যুক্তরাজ্যে ফেরত আসার জন্য শামীমা বেগমের আবেদনটি খারিজ করা হয়েছে'
যুক্তরাজ্যের সুপ্রিমকোর্ট জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগমকে ফেরার অনুমতি দেননি।
শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এই রায় ঘোষণা করেন আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারক রবার্ট রিড লিখিত রায়ে বলেন, "যুক্তরাজ্যে ফেরত আসার জন্য শামীমা বেগমের আবেদনটি খারিজ করা হয়েছে।"
বিচারকরা বলেছেন, সুষ্ঠু শুনানির অধিকার জনগণের সুরক্ষার মতো অন্যান্য বিবেচ্য বিষয়গুলোকে অগ্রাহ্য করে না।
তারা আরও জানান, সুষ্ঠু বিচার পেতে শামীমাকে যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে বাধ্য করা উদ্ভূত পরিস্থিতির যথাযথ সমাধান নয়। তবে শামীমা অপেক্ষাকৃত নিরাপদ অবস্থায় না পৌঁছানো পর্যন্ত ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে তার আইনি লড়াই বিরত রাখা যেতে পারে।
"ওটাও সঠিক সমাধান নয়। কারণ, ওটা সম্ভব হতে কত দীর্ঘ সময় লাগবে সেটাও কেউ জানে না। বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে তাতে এই উভয়সঙ্কটের সঠিক কোনো সমাধানই আসলে নেই।"
বর্তমানে ২১ বছর বয়সী এই শামীমা বেগম ১৫ বছর বয়সে পূর্ব লন্ডনে নিজের স্কুল ছেড়ে দুই বন্ধু নিয়ে সিরিয়ায় বেড়াতে গিয়েছিলেন এবং একজন আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেছিলেন।
২০১৯ সালে তিনি টাইমস পত্রিকায় বলেছিলেন যে সিরিয়ায় যাওয়ার জন্য তিনি আফসোস করেন না এবং একটি বিনে ফেলে দেয়া "কাটা মস্তক" দেখে তিনি "বিব্রত" হননি।
২০১৯ সালে ডানপন্থী সংবাদপত্রগুলোর নেতৃত্বে এক আন্দলনের মাঝে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে যুক্তরাজ্য তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়।শামীমা বেগমকে করুণ দশায় একটি শিবিরে রাখা হয়েছিল, তার স্বামী সিরিয়ার কারাগারে রয়েছেন বলে জানা গেছে এবং তার তিন সন্তান মারা গেছে।
তিনি যুক্তরাজ্যে ফিরে যাওয়ার অনুমতির জন্য আবেদন করেছিলেন যেন তিনি নাগরিকত্ব হারানোর ব্যাপারে আইনি চ্যালেঞ্জ করতে পারেন।
তার যুক্তি ছিল, ব্রিটিশ সরকার "অবৈধভাবে" তাকে রাষ্ট্রহীন করেছে এবং তার জীবনকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। তাছাড়া, যুক্তরাজ্যে ফিরতে না পারলে তার পক্ষে আইনি লড়াইও ঠিকমত চালানো সম্ভব নয়।
শামীমা বেগম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হলেও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে তিনি তার নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়ে বিবেচনা করবেন না।
গত বছরের জুলাইয়ে আপিল আদালত তাদের রায়ে জানায়, শামীমাকে সুষ্ঠু শুনানি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, সিরিয়ার ক্যাম্পে থাকা অবস্থায় তার পক্ষে আইনি লড়াই চালানো সম্ভব নয়। এ কারণেই তাকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দেওয়া উচিত।
তবে পরিবর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে এবং তিনি নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে "জোটবদ্ধ" রয়েছেন বলে জোর দেয়।
মতামত দিন