বিশ্বজুড়ে সমালোচনা হলেও মিয়ানমারের সেনা প্রধানরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী অন্তত একবছর সেনাবাহিনীর অধীনে থাকবে দেশটি
মিয়ানমারের অভ্যুত্থান ব্যর্থ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। নির্বাচনের উল্টো ঘটনা “অগ্রহণযোগ্য”, এটি যে দেশ শাসনের কোনো উপায় না তা অভ্যুত্থান নেতাদের বুঝিয়ে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, “মিয়ানমারের ওপর পর্যাপ্ত চাপ প্রয়োগ করে এই অভ্যুত্থানের ব্যর্থতা নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ে মূল ভূমিকা পালনকারী দেশগুলোকে সক্রিয় করতে সম্ভাব্য সবকিছুই করবো আমরা। নির্বাচনের ফল ও জনগণের ইচ্ছা উল্টে দেওয়া পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। এটি দেশ শাসনের উপায় নয় আর এটি সামনে এগিয়ে যাওয়ারও কোনো পথ না, এটি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে বুঝিয়ে দেওয়া যাবে বলে আশা করছি আমি।”
মিয়ানমারে সাংবিধানিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এবিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্য একমত হবে বলে আশাবাদী আমি।”
মিয়ানমারের ঘটনা নিয়ে প্রথম থেকেই সরব জাতিসংঘ। বুধবার এবিষয়ে জাতিসংঘে বিশেষ বৈঠক বসে। জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল আন্তনিও গুতেরেস টুইটে লিখেছেন, সকলের এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত।
এদিনই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার নিয়ে বৈঠক হয়। তবে সেখানে ঐক্যমত্যভাবে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব নেওয়া যায়নি। কারণ, চীন সময় চেয়েছে। চীন সম্মতি না দিলে নিরাপত্তা পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব নেওয়া সম্ভব নয়। এর আগে রোহিঙ্গা নিধনের সময়েও মিয়ানমারের পাশে দাঁড়িয়েছিল চীন এবং রাশিয়া। প্রকাশ্যে তারা মিয়ানমারের কাজকে সমর্থন করেছিল। এবার সেনা অভ্যুত্থানকেও তারা মান্যতা দেবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
গত সোমবার মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান হয়। অং সান সুচির নেতৃত্বে দেশে যে গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হয়েছিল, তা উৎখাত করে সেনাশাসন ঘোষণা করা হয়। আগামী অন্তত একবছর এই ব্যবস্থাই চলবে বলে তারা জানিয়ে দেয়। সু চি-সহ দেশের একাধিক নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়। সু চির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, শেষ নির্বাচনে তিনি ব্যাপক কারচুপি করেছেন। তবে বাস্তবে তার বিরুদ্ধে পুলিশ ভোটে কারচুপির মামলা করেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, তার বাড়ি থেকে ১০টি রেডিও পাওয়া গিয়েছে। বেআইনি ভাবে তা বিদেশ থেকে আনা হয়েছিল। সে কারণেই তার বিরুদ্ধে আমদানি-রপ্তানি আইনে মামলা হয়েছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে সুচির সর্বোচ্চ তিনবছরের জেল হতে পারে।
এদিকে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা হলেও, মিয়ানমারের সেনা প্রধানরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসার আপাতত কোনো প্রশ্নই নেই। আগামী অন্তত একবছর দেশ সেনার অধীনে থাকবে।
মতামত দিন