জোড়া আত্মঘাতী এ হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস
ইরাকের রাজধানী বাগদাদের একটি জনাকীর্ণ মার্কেটে দুইটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৩২ জন নিহত ও ১১০ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) এ হামলার ঘটনায় জন্য দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট গ্রুপ (আইএস)। গত তিন বছরের মধ্যে বাগদাদে এটি সবচেয়ে মারাত্মক আক্রমণ। পূর্বে আরও একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা এই শহরকে লক্ষ্য করে চালানো হয়।
প্রথম বোমাটি বিস্ফোরণের পর ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার জন্য যখন আরও লোকজন ঘটনাস্থলে আসলে তখনই দ্বিতীয় আরেকটি বিস্ফোরণটি ঘটে।
হামলাটি একটি খোলামেলা বাজারে হয় যেখনে মূলত সেকেন্ড হ্যান্ড পোশাক বিক্রি হত। সারা দেশে প্রায় এক বছর পর কোভিড-১৯ এর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়াতে মানুষজন সেখানে বেশ ভিড় ছিল।
ঘটনাস্থল থেকে একজন এএফপি ফটোগ্রাফার জানান, সুরক্ষা বাহিনী ঘটনাস্থলের অঞ্চলটিকে ঘিরে রেখেছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে,যারা প্রাণ হারিয়েছেস তারা সকলে হামলার ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছিল এবং আহতদের বেশিরভাগকেই চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মধ্যরাতের পর আইএস তাদের অনলাইনে প্রচারের চ্যানেলগুলিতে হামলার দায় স্বীকার করেছে।
২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের সময় পরবর্তীকালে আইএস ইরাকের বেশিরভাগ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং বাগদাদে এ ধরনের সহিংসতা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।
তবে ২০১৩ সালের শেষদিকে এই আই এস এর আঞ্চলিক পরাজয়ের সাথে সাথে বাগদাদে আত্মঘাতী বোমা হামলা কমে যায়।
সংবেদনহীন ও বর্বর কর্মকাণ্ড
দেশটির রাষ্ট্রপতি বারহাম সালেহ বৃহস্পতিবারের এই হামলার নিন্দায় জানিয়ে সরকার দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে এমন আশ্বাস দিয়েছেন।
পোপ ফ্রান্সিস, যিনি মার্চ মাসে ইরাক সফর করবেন বলে আশাবাদী, হামলাটিকে "বর্বরতার বোধহীন আচরণ" বলে সমালোচনা করেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
আসন্ন নির্বাচন
ইরাকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এই হামলাটি ঘটেছে এবং প্রায়ই বোমাবাজি ও হত্যার ঘটনা ঘটছে।
২০১৮ সালে ইরাকের সংসদীয় নির্বাচনের শেষ দফার কয়েক মাস আগেও আক্রমণ হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল-কাদেমি ২০১৯ সালের ব্যাপক বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় তফসিলের প্রায় এক বছর আগেই জুন মাসে মূলত ২০২১ সালের সাধারণ নির্বাচনটি করেছিলেন।
আইএস ২০১৪ সালে ইরাকের এক তৃতীয়াংশ দখল করে এবং বিপজ্জনকভাবে রাজধানীর কাছাকাছি ঘাঁটি তৈরি করে। তবে ইরাকি সেনাবাহিনীর তীব্রভাবে তিন বছরের লড়াইয়ে ফলে তারা খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি। তবুও, গ্রুপটির স্লিপার সেলগুলি মরুভূমি এবং পার্বত্য অঞ্চলে কার্যক্রম চালিয়ে গেছে।
আইএস-এর বিরুদ্ধে ইরাকের অভিযানকে সমর্থনকারী মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট ইরাকি সেনাবাহিনীর বর্ধিত সক্ষমতা উদ্ধৃত করে গত এক বছরে ইরাকে তাদের সেনাবাহিনীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে এনেছে।
ইরাকে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের ২,৫০০ সেনা অবশিষ্ট রয়েছে ।এক বছর আগে এই সংখ্যা ছিল ৫,২০০।
তারা মূলত প্রশিক্ষণ, ড্রোন নজরদারি সরবরাহ এবং বিমান হামলা চালানোর দায়িত্বে রয়েছে। অপরদিকে, ইরাকী সুরক্ষা বাহিনী শহরাঞ্চলে সুরক্ষা পরিচালনা করছে।
মতামত দিন