গত বছর ভারত সরকার সুপ্রিম কোর্টকে লিখিতভাবে জানিয়েছিল, প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ভারতে বসবাস করছেন এবং তাদের কারণে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতের পুলিশ সাত জন রোহিঙ্গা মুসলীমকে সীমান্তে পাঠিয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ২০১২ সাল থেকে জেলে বন্দী থাকা এই রোহিঙ্গাদেরকে গত বুধবার (২ অক্টোবর) বাস যোগে সীমান্তে পাঠানো হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানায়।
এ প্রসঙ্গে ভারতের উত্তরপূর্ব অঞ্চলের প্রদেশ আসামের পুলিশের অতিরিক্ত পরিচালক ভাস্কর জ্যোতি মোহন্ত বলেন, “এটা একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। আমরা সকল অবৈধ বিদেশীদেরই ফেরত পাঠাই।”
উল্লেখ্য, ভারতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার পরিচয়পত্র পাওয়া রোহিঙ্গা আছে প্রায় ১৬ হাজার। আরও প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গা বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশের দায়ে আটক আছে দেশটির বিভিন্ন জেলে।
গত বছর ভারত সরকার সুপ্রিম কোর্টকে লিখিতভাবে জানিয়েছিল, প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ভারতে বসবাস করছেন এবং তাদের কারণে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকেই ভারতের একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন দল বিজেপি'র নেতারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের এই অবস্থানের কথা জানিয়ে আসছেন।
এ বছরের ১৫ এপ্রিল দক্ষিণ দিল্লির কালিন্দিকুঞ্জের কাছে শরণার্থী শিবিরে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। বিজেপির যুব মোর্চা নেতা মনীষ চান্দেলা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে আগুন দেওয়ার দায় স্বীকার করেছিলেন। ওই ঘটনায় দুই শতাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। প্রায় ৫০ রোহিঙ্গা পরিবার সম্পূর্ণ গৃহহীন হয়ে পড়ে।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির সবচেয়ে বড় অংশটি বর্তমানে বাংলাদেশের আশ্রয়ে আছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের পর থেকে গত এক বছরে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তবে ১৯৭০ সালের শেষ থেকেই বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। ২০১৭ সালের আগস্টের ২৫ তারিখের আগেই কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ছিল ৪ লাখেরও বেশি। আর ২০১৭ সালের পর বর্তমানে জেলাটিতে বাস করছে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী।
মতামত দিন