একটি কাজের আশায় তিনি যশ চোপড়ার বাড়ি পর্যন্ত হেঁটে গিয়েছিলেন
চলচ্চিত্র নির্মাতা যশ চোপড়ার হাত ধরে বলিউডে বড় পরিবর্তন এসেছিল। শুধুমাত্র রোমান্টিক ঘরানার চলচ্চিত্র দিয়েই নয়, অনন্য প্রতিভার কারণেও তিনি ছিলেন সর্বজন সমাদৃত। ৯০ দশকের শুরুতে বলিউড অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন প্রায় দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন। তখন যশ চোপড়ার কাছে চাকরি চাওয়ার পর তার ক্যারিয়ারে নতুন এক অধ্যায়ের শুরু হয়।
অমিতাভের উচ্চাভিলাষী ব্যবসায়িক উদ্যোগ, এবিসিএল, ৯০ দশকে নাটকীয়ভাবে ব্যর্থ হয়। যা তাকে বিপুল ঋণের মধ্যে ফেলে দেয়। কোনো উপায় না দেখে অমিতাভ কেবল একটি কাজ পাওয়ার জন্য যশ চোপড়ার বাড়ি পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
২০১৬ সালে একটি ইন্ডিয়া টুডে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, “আমি যে কর্পোরেশন শুরু করেছি তাতে আমার বিশাল আর্থিক ক্ষতি হয়। এটি দেউলিয়া হয়ে গেল এবং আমাকেও দেউলিয়া করে দিল। পরে আমি যশের কাছে গিয়ে বললাম আমি কর্মহীন হয়ে পড়েছি। আমার একটি কাজ প্রয়োজন।”
অমিতাভের ছেলে অভিষেক বচ্চন একজন ইউটিউবারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সেই সময়ের কথা স্মরণ করে বলেছিলেন, তখন পরিবারের সঙ্গে থাকার জন্য আমাকে বোস্টন কলেজ ছেড়ে দিতে হয়েছিল। যদিও আমি তাকে কোনোভাবেই সাহায্য করার উপযুক্ত ছিলাম না, কিন্তু ছেলে হিসেবে আমি শুধু অনুভব করেছি যে আমার বাবার পাশে থাকা দরকার এবং যেভাবেই হোক সাহায্য করতে হবে। তাই আমি আমার কলেজ ছেড়ে এসেছিলাম আমি বাবাকে তার কোম্পানিতে সাহায্য করতে শুরু করেছিলাম।
তিনি একটি বিশেষ ঘটনা স্মরণ করে বলেন, “বাবা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি আবার তার অভিনয় জীবন পুনরায় শুরু করবেন। তাই পরের দিন সকালে, তিনি যশ চোপড়ার বাড়িতে হেঁটে গেলেন। গিয়ে তাকে বললেন, দেখুন, আমার চাকরি নেই, কেউ আমাকে আর কাজ দিচ্ছে না, আমার সিনেমা চলছে না। আমি আপনাকে অনুরোধ করতে এসেছি দয়া করে আমাকে কাজ করার জন্য একটি চলচ্চিত্র দিন।”
অমিতাভ এই পরিস্থিতি থেকে নিজেকে টেনে তুলে এনেছিলেন, ফের বলিউডের অঙ্গনে নিজেকে সফল অভিনেতা ও সঞ্চালক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। শুরুটা হয়েছিল যশের পুত্র আদিত্য চোপড়া পরিচালিত “মোহাব্বতেইন” সঙ্গে, এছাড়াও টেলিভিশন গেম শো “কৌন বানেগা ক্রোড়পতি” বিগ বি-কে অনেকখানি আর্থিক স্থিরতা দিয়েছিল। এরপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
প্রসঙ্গত, ভাবতে অবাক লাগলেও আজ থেকে বছর খানেক আগে কার্যত দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন। ১৯৯৯ সালে নিজের কোম্পানি এবিসিএল (অমিতাভ বচ্চন কর্পোরেশন লিমিটেড)-এর জন্য বাজারে প্রচুর টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল বলিউড শাহেনশার। মূলত ফিল্ম প্রযোজনা এবং ডিস্ট্রিবিউশনের সঙ্গে জড়িত এই কোম্পানি এতটাই আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছিল যে পথে বসার হাল হয় বচ্চন পরিবারের। ২০১৩ সালে এক সাক্ষাত্কারে জীবনের এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি নিয়ে প্রথমবার মুখ খুলেছিলেন অমিতাভ।
মতামত দিন