একাধিক নায়িকার সঙ্গে প্রেম ও ক্ষণস্থায়ী দাম্পত্যে নিঃসঙ্গ ছিলেন রাজীব

বলিউডের বিখ্যাতও প্রভাবশালী কাপুর পরিবারের সদস্য ছিলেন তিনি। রাজিব কাপুর ছিলেন বলিউডের কিংবদন্তী নায়ক রাজ কাপুরের কনিষ্ঠ পুত্র এবং রণধীর ও ঋষি কাপুরের ভাই।

অভিনয়ের পাশাপাশি সুযোগ পেয়েছিলেন পরিচালনা, প্রযোজনাসহ চলচ্চিত্রের অন্য শাখাতেও। কিন্তু প্রতি ক্ষেত্রেই প্রত্যাশিত সাফল্য ছিল অধরা। কাপুর পরিবারের অন্য সদস্যদের খ্যাতি ও জনপ্রিয়তার ছায়াতেই ঢাকা থেকে গিয়েছেন রাজীব কাপুর। 

রাজ ও কৃষ্ণা কাপুরের ছোট ছেলে রাজীবের জন্ম ১৯৬২ সালের ২৫ অগস্ট। ছবিতে আত্মপ্রকাশ ঘটে ২১ বছর বয়সে। তার প্রথম ছবি "এক জান হ্যায় হাম" মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৩ সালে। 

এর পর "আসমান" ছবিতে টিনা মুনিমের বিপরীতে তিনি অভিনয় করেন দ্বৈত ভূমিকায়।

বেশ কিছু ছবির পরেও ছেলে নায়ক হিসেবে জনপ্রিয়তা পেলেন না দেখে আসরে অবতীর্ণ হন স্বয়ং রাজ কাপুর। তিনি ১৯৮৫ সালে পরিচালনা করেন "রাম তেরী গঙ্গা মৈলী"। ছবিতে নবাগতা মন্দাকিনীর বিপরীতে নায়ক ছিলেন রাজীব। 

ছবিটি বক্স অফিসে ছিল সুপারহিট। ছবির গানগুলিও জনপ্রিয় হয়। কিন্তু ব্লকবাস্টার ছবির নায়ক হয়েও রাজীবের কেরিয়ারের পালে বাড়তি কোনও বাতাস যোগ হল না।

হলে ছবিটির মুক্তির পরে রাজীবের মনে হয়েছিল, তার থেকে ছবিতে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নায়িকা মন্দাকিনীকেই। এর পর "লাভার বয়", "জবরদস্ত", "জ্বলজ্বলা"-সহ আরও কিছু ছবিতে অভিনয় করেন রাজীব। কিন্তু কোনও ছবিই সাফল্যের নিরিখে পৌঁছতে পারেনি "রাম তেরী গঙ্গা মৈলী"-র ধারেকাছে।

১৯৯০ সালে "জিম্মেদার" ছবিতে শেষ বার অভিনয় করেন রাজীব। এর পর তাকে আর কোনও দিন অভিনেতা হিসেবে পাওয়া যায়নি।

রাজীবের প্রথম ছবি "এক জান হ্যায় হাম"-তে নায়িকা ছিলেন দিব্যা রানা। তার সঙ্গে রাজীবের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। পরবর্তীকালে অভিনেত্রী তথা রাজনীতিক নাগমার সঙ্গেও রাজীবের সম্পর্ক ছিল বলে শোনা যায়।

তবে এর কোনটাই বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। রাজীব বহু দিন অবধি অকৃতদার ছিলেন। শেষে ২০০১ সালে তিনি আরতি সবরওয়ালকে বিয়ে করেন ৩৯ বছর বয়সে।

পেশায় স্থপতি আরতি চাকরি করতেন কানাডায়। তার সঙ্গে রাজীবের দাম্পত্য স্থায়ী হয়েছিল মাত্র ২ বছর। ২০০৩ সালে তাদের বিয়ে ভেঙে যায়। বিচ্ছেদের কারণ নিয়ে মুখ খোলেননি দু’জনের কেউই।

অভিনয় থেকে সরে আসার পর ও কিছু সময় রাজীবকে প্রযোজক হিসেবে পেয়েছিল বলিউড। ১৯৯১ সালে তিনি প্রযোজনা করেন সুপারহিট ‘হীনা’ ছবিটির। এরপর "প্রেম গ্রন্থ", "আ আব লওট চালে" সহ আরও কয়েকটি ছবি প্রযোজনা করলেও বক্স অফিসে বেশিরভাগ ছবিই সাফল্যের মুখ দেখেনি। এর পর রাজীব কাপুর আর কোনও ছবি পরিচালনা বা প্রযোজনা করেননি।

শেষ বয়সে রাজীব ছিলেন নিঃসঙ্গ এবং একা। বড় ভাই ঋষি কাপুরের মৃত্যুর এক বছরও হয়নি। মঙ্গলবার ( ৯ ফেব্রুয়ারি) নিজের বাড়িতে মাত্র ৫৮ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ভাই রাজীব। ফলে হঠাৎ করেই সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন পরিবারের সবার আদরের "চিম্পু"।