বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের শুল্ক কমানোর বিষয়টি বিবেচনার জন্য মার্কিন সরকারের কাছে আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি
বিশ্বব্যাপী নিরাপদ বাজার গড়ে তোলার লক্ষ্যে দামের ক্ষেত্রে মার্কিন ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতাদের আরও ন্যায়সঙ্গত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।
শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত “রানা প্লাজার সাত বছর পর: কে কি করছে?” শিরোনামে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান।
ফারুক হাসান বলেন, “নিরাপত্তা এবং স্থায়িত্বের জন্য আমাদের কারখানাগুলো ক্রমবর্ধমান অর্থ বিনিয়োগ করছে। এছাড়া, গত পাঁচ বছরে উৎপাদন খরচ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৩০% বেড়েছে। অন্যদিকে, প্রতি বছর আমাদের পোশাকের দাম কমছে। যদিও মুক্তবাজার অর্থনীতিতে মূল্য নির্ধারণ করা যায় না কিন্তু সামাজিকভাবে ন্যায্য পণ্য উৎপাদনের জন্য কেউ কম মূল্যের পক্ষে যুক্তি দিতে পারে না।”
তিনি আরও বলেন, “ব্র্যান্ড এবং আমাদের সরবরাহকারীদের মধ্যে সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্ব আমাদের অসাধারণ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করেছে। ভবিষ্যতেও অসাধারণ প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত রাখতে এটি ভূমিকা রাখবে।”
গোলটেবিল বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের সুবিধা নিশ্চিত করতে তৈরি পোশাক শিল্পকে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ এবং উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
গত কয়েক বছর ধরে কীভাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ শিল্পে পরিণত হয়েছে এবং সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সবুজ পোশাক কারখানা রয়েছে সেই ব্যাপারে মার্কিন সরকার এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের বিস্তারিত জানান বিজিএমই সভাপতি ফারুক হাসান।
শ্রমিকদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপ এবং ব্যবস্থা সম্পর্কেও বক্তব্য রাখেন তিনি। এছাড়া, মার্কিন সরকারের কাছে বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের শুল্ক কমানোর বিষয়টি বিবেচনার বিষয়ে আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে (বিশেষ করে নন-কটন খাতে) বিনিয়োগের সুযোগ সন্ধান করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মার্কিন ব্যবসায়ী এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি। পাশাপাশি সমন্বিত আচরণবিধির প্রয়োজনীয়তার বিষয়েও জোর দেন তিনি।
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্রিস্টোফার উইলসন, টেক্সটাইল বিষয়ক সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি উইলিয়াম জ্যাকসন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার পরিচালক জেনিফার লারসন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লেবারের পরিচালক মরিন হ্যাগার্ডসহ যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া, এছাড়া ম্যাকলার্টি অ্যাসোসিয়েটসের প্রতিনিধি টেরেসিতা শ্যাফার, বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মিরান আলী, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রতিনিধি, আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ), ওয়ালমার্ট ও টার্গেটের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এতে অংশ নেন।
মতামত দিন