বাগান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগাম এই বৃষ্টিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে চা-গাছ। গাছে গাছে গজাবে আগাম পাতা, আসবে নতুন কুঁড়ি
সময়মতো বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার চায়ের ফলন বাম্পার হবে বলে জানিয়েছেন চা বাগানের মালিকেরা। ইতোমধ্যে ঝুম বৃষ্টির ছোঁয়ায় নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে চারা গাছ (ইয়ং টি)।
বাগান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগাম এই বৃষ্টিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে চা-গাছ। গাছে গাছে গজাবে আগাম পাতা, আসবে নতুন কুঁড়ি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে জানা গেছে, গত ১ মার্চ শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর ৩১ মার্চ সেই তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এটিই ছিল (৩১মার্চ) বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
জেলা আবহাওয়া সূত্রে জানা যায়, মার্চ মাসে ৯টি দিন শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তারিখগুলো হলো: ১৩ মার্চ ১৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৫ মার্চ ১৬.৭, ১৭ মার্চ ১৭.২, ১৮ মার্চ ১৫.৮, ১৯ মার্চ ১৬.৪, ২৩ মার্চ ১৬.৪, ২৪ মার্চ ১৮.২, ২৮ মার্চ ১৫.৩, এবং ৩১ মার্চ ১৯.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, পুরো মার্চজুড়ে সিলেট এবং শ্রীমঙ্গলই দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিলেটের অঞ্চলের চায়ের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। ৭ মার্চ, ৯ মার্চ, ৩০ মার্চ এবং ৩১ মার্চ সিলেটের মোট রেকর্ডকৃত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৩১ মিলিমিটার। আর সেই তারিখগুলোতে শ্রীমঙ্গলে মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড ১১৬ মিলিমিটার।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের অবহাওয়া সহকারি আশরাফুল আলম বলেন, দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে তুলনামূলকভাবে শ্রীমঙ্গলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এর অন্যতম কারণ পাহাড়ি অঞ্চল।
শ্রীমঙ্গল নাহার চা বাগানে ব্যবস্থাপক পীযষুকান্তি ভট্টাচার্য বলেন, “বৃষ্টি হওয়াতে আমরা স্বস্তিতে আছি। প্রথম দিকে শিলাবৃষ্টি হওয়াতে চা বাগানে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে গত বছরের চেয়ে এবার উৎপাদন বেশি হবে যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে।”
বাংলাদেশ চা সংসদ (বিটিএ) সিলেট ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান ও ফিনলে টি কোম্পানির ভাড়াউড়া ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, “অধিক বৃষ্টিপাতের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রায় দেড়শ’ বছর আগে ব্রিটিশরা এখানে চা আবাদ শুরু করে। না হলে দেশের অন্য জায়গাই তারা চায়ের আওতায় নিয়ে আসতো। এখানে উঁচু-নিচু টিলাঘেরা এ অঞ্চলের পাহাড়ি জায়গাগুলো চায়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যার ফলে সিলেট বিভাগে চায়ের আবাদ শুরু হয়।”
তিনি আর ও বলেন, “সময়মতো বৃষ্টি হওয়াতে চায়ের জন্য আর্শীবাদ। চাযের নতুন কুঁড়ি বেশি করে গজাবে। সার্বিক দিক বিবেচনায় চায়ের উৎপাদন এবার ভাল হবে।”
প্রসঙ্গত, দেশে ১৬৭টি চা বাগানের মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় মোট ৯৩টি চা বাগান রয়েছে।
মতামত দিন