ব্যাপকহারে ড্রাগন, পাকিজা, বীগ ফ্যামিলি, হানি কুইন, বাদশা ও ব্লাক মাস্টার জাতের তরমুজ চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বেশি চাষ হচ্ছে ড্রাগন ও পাকিজা
দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম লবণাক্ত এলাকা হচ্ছে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা। এই উপজেলায় জমিতে আমন ধান ছাড়া অন্য কোনো ফসল হত না। বেশ কিছুদিন আগে এ সব জমিতে লবণ পানি থই থই করত। লবণ পানি বন্ধ হলে পরে ওই সব জমিতে তিল চাষ শুরু হয় যা বটিয়াঘাটায় দ্বিতীয় বৃহত্তর ফসল হিসেবে পরিচিত।
গত দু’বছর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তিল চাষ বাদ দিয়ে কৃষকেরা তরমুজ চাষে ঝুঁকে পড়েন। প্রথমবারই জমিতে ভালো ফসল হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর তিনগুণ বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। যে কারণে তরমুজকে ঘিরে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন হাজারও কৃষক।
তরমুজ বটিয়াঘাটার দ্বিতীয় বৃহত্তম ফসল হিসেবে পরিচিত। লবণের করালগ্রাসে দক্ষিণাঞ্চলে পতিত থাকত হাজার হাজার হেক্টর জমি। দুবেলা খেয়ে জীবন চলত বেশির ভাগ কৃষকের।
বটিয়াঘাটা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. রবিউল ইসলামের দিক নির্দেশনায় এবং কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আবু বক্কর সিদ্দিকী ও শরিফুল ইসলামসহ ২১ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার বারবার পরামর্শ, আলোচনা সভা ও বিভিন্ন এলাকায় দিনরাত ছুটে চলার কারণে আজ প্রায় ২২০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির তরমুজ চাষ হচ্ছে। এই লাভজনক চাষে উপজেলার ৭ ইউনিয়নের হাজার হাজার চাষিরা ঝুঁকছেন।
তরমুজের জীবনকাল ৯০-১২০ দিন। তবে ফল ধরা শুরু হয় ৬০ দিন পর থেকে। এই উপজেলায় ব্যাপকহারে ড্রাগন, পাকিজা, বীগ ফ্যামিলি, হানি কুইন, বাদশা ও ব্লাক মাস্টার জাতের তরমুজ চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বেশি চাষ হচ্ছে ড্রাগন ও পাকিজা।
গত বছর এ উপজেলায় তরমুজ চাষ হয়েছিল ৭৮০ হেক্টর জমিতে। এ বছর চাষ হচ্ছে তার তিনগুণ অর্থাৎ ২২০০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে খরচ পড়ে ১ লাখ ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং বিক্রি হতে পারে প্রায় ৪ লাখ টাকা। সে অনুযায়ী উপজেলাব্যাপী প্রায় ৪৪ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রির আশা করছেন কৃষকরা।
মতামত দিন