‘এ প্রকল্পে ব্যাংকগুলো পর্যাপ্ত ব্যাংক ঋণ দেয় না। যে ঋণ পাওয়া যায় তাও চড়া সুদে। সরকার সহযোগিতা করলে ফুল, সবজি চাষ করে ভারত ও চীনের মতো হতে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগবে’
গাজীপুরের শ্রীপুরে ফুলের বাগানে বিদেশি ফুল "টিউলিপ" ফুটিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন দেলোয়ার দম্পতি। নিজেদের চেষ্টায় সফল হয়ে তারা উদ্যোক্তাদের মধ্যে অন্যতম মডেলে পরিণত হয়েছেন।
ইতোমধ্যে তারা ফল, ফুল ও সবজি চাষে অনেককে প্রশিক্ষিত করে তুলেছেন। তারা তিন শতাধিক উদ্যোক্তা তৈরিরও কারিগর। তাদের ফলানো "টিউলিপ" ফুল বিদেশে রপ্তানি করার সম্ভাবনা রয়েছে। যেভাবে তারা উদ্যোক্তা তৈরি করছেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তারা এটাকে বিস্তৃত করতে পারবেন।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া দক্ষিণখন্ড এলাকার দেলোয়ার দম্পতির ফুলের বাগান "মৌমিতা ফ্লাওয়ার্স" পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
দেলোয়ার দম্পতির উদাহরণ টেনে মন্ত্রী বলেন, "শিক্ষাজীবন শেষ করে শিক্ষার্থীরা চাকুরি না খুঁজে উদ্যোক্তা হয়ে উঠবেন। তাদের উদ্যোক্তা হতে সরকারিভাবে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও চান আমাদের ছেলে মেয়েরা উদ্যোক্তা হবে, নতুন নতুন কাজ তৈরি করবে। নিজেরা অন্য আরও দশজনকে চাকরি দিবে।"
এ সময় তিনি দেলোয়ার দম্পতির টিউলিপ, বিদেশি গোলাপ ফুল, ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি বাগানসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদের আরও বলেন, "বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকার সবসময়ই উদ্যোক্তাদের পাশে আছে। কেউ নতুন কিছু করতে চাইলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের সহায়তা দেন, উৎসাহ দেন। দেশে এভাবে ফুল চাষ হলে আমরাও সবজির পাশাপাশি ফুলও রফতানি করতে পারবো ইনশাল্লাহ্।"
প্রসঙ্গত, প্রায় সাত একর জমিতে কালার ক্যাপসিকাম, গ্রীন ক্যাপসিকাম, টিউলিপ ফুল, ওরিয়েন্টাল লিলি, ডাচ গোলাপ, দেশি গোলাপ, স্ট্রবেরি, জি-৯ কলাসহ বিভিন্ন ফুল ফলের চাষ ও চারা তৈরি করেন দেলোয়ার হোসেন দম্পতি।
ওই দম্পতি জানান, ২০০২ সাল থেকে নিজের কিছু জমিতে এসব চাষাবাদ শুরু করেন। পরে তা নিজের পাঁচ বিঘা ও চুক্তিতে নেয়া ১৫ বিঘা জমিতে তা সম্প্রসারণ করেন।
সারাদেশে তিনি এ ধরনের চাষে তিন’শ জন উদ্যোক্তা তৈরি করেছেন।
এ ধরনের চাষাবাদে কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, "এ প্রকল্পে ব্যাংকগুলো পর্যাপ্ত ব্যাংক ঋণ দেয় না। যে ঋণ পাওয়া যায় তাও চড়া সুদে। সরকার সহযোগিতা করলে ফুল, সবজি চাষ করে ভারত ও চীনের মতো হতে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগবে।"
এ সময় শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শামসুল আলম প্রধান, গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রিনা পারভীন, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাসলিমা মোস্তারী, শ্রীপুর পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম মোল্লা, গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল আলম রবিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মতামত দিন