রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে এ দাবি জানান তারা
অবিলম্বে বৈষম্য বিলোপ আইন পাসের দাবি জানিয়ে সমাবেশ করেছে দলিত জনগোষ্ঠী। শনিবার (৯ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে এ দাবি জানান তারা।
“দলিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চাই বৈষম্য বিলোপ আইন” ব্যানারে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন, দলিত নারী ফোরাম ও নাগরিক উদ্যোগ যৌথভাবে এই সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে দলিত নারী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের (বিডিইআরএম) সভাপতি মনি রানী দাস বলেন, “আমাদের সন্তানরা কোনও ভালো স্কুলে লেখাপড়া করতে পারে না। আমরা ভালো কোনও রেস্তোরাঁ-হোটেলে খেতে পারি না। আমাদের সঙ্গে কেউ বসে না, চাকরি দেয় না। জাতপাত ভেদাভেদ আমাদের সামাজিক ন্যায়বিচার প্রাপ্তির প্রতিশ্রুতির ব্যত্যয় ঘটায়। আমরা আমাদের ন্যায্য ও মৌলিক অধিকার চাই।”
সমাবেশে জানানো হয়, দেশে জন্ম ও পেশাগত কারণে বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার প্রায় ৬৫ লাখ জনগোষ্ঠী দলিত হিসেবে পরিচিত। তাদের মধ্যে পেশা ও জন্ম পরিচয়ভিত্তিক প্রায় ৮০টি সম্প্রদায় রয়েছে, যারা সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার।
জানা যায়, ২০১৪ সালে দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকারকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বৈষম্য বিলোপ আইনের একটি খসড়া প্রণয়ন করে আইন কমিশন। তখন নাগরিক সমাজের বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার পর চূড়ান্ত খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় কমিশন। তাদের রিপোর্টে মুচি, মেথর, সুইপার, জোলা, রবিদাস, ডোম, ডোমার, বাগদি, বেদে, বাওয়ালি, ঋষিসহ সামাজিক নিগ্রহ ও অস্পৃশ্যতার শিকার প্রায় ২৩ রকমের দলিত শ্রেণির মানুষের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। দলিত শ্রেণির বাইরেও যারা বঞ্চিত তাদের আইনের সুরক্ষার আওতায় আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফোরাম সরকারকে বৈষম্য বিরোধ আইনটি প্রণয়নের ব্যাপারে সুপারিশ করে। এছাড়া আইনমন্ত্রী এই আইন প্রণয়নের ব্যাপারে একাধিকবার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এটি পাসের ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি হয়নি।
সমাবেশে মাহবুব আক্তারের নির্দেশনায় পরিবেশিত একটি নাটিকায় দলিত শ্রেণির বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরা হয়। কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন বিডিইআরএমের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কৈলাশ রবি দাস।
মতামত দিন