মুভিটি নির্মাণে খরচ হয়েছিল প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার
অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের পর ‘‘নো টাইম টু ডাই’’ নিয়ে দর্শকদের সামনে হাজির হলো কিংবদন্তির স্পাই জেমস বন্ড। শেষ মুভি স্পেক্টারের পর পেরিয়ে গেছে ছয় ছয়টি বছর। কথা ছিল ২০১৯ এর ৮ নভেম্বর ‘‘নো টাইম টু ডাই’’-এর পর্দা উঠবে। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে পর পর তিনবার চলচ্চিত্রটি মুক্তির দিনক্ষণ পিছিয়ে যায়।
অবশেষে প্রায় দুই বছরের কাছাকাছি সময়ে এসে গত ৩০ সেপ্টেম্বর লন্ডনে জেমস বন্ড সিরিজের এই ২৫তম মুভির প্রিমিয়ার হয়। আর বাংলাদেশে এর শুভ মহরত হতে যাচ্ছে শুক্রবার (৮ অক্টোবর)।
চলুন, মুভিটির ব্যাপারে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
জেমস বন্ড, এজেন্ট- ০০৭ অথবা একজন দুর্ধর্ষ স্পাই
১৯৫৩ সালে ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সৃষ্ট জেমস বন্ড শুধু কাল্পনিক চরিত্রেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। বিনোদন জগতের সীমানা পেরিয়ে জেমস বন্ড কয়েক যুগ ধরে রীতিমতো একটি লাইফস্টাইল বনে গেছে।
গোল্ডফিঙ্গার, থান্ডার্বল, স্কাইফল, স্পেক্টার মুভিগুলো অস্কারের খাতায় নিজেদের নাম লিখিয়ে নিয়েছে। জেমস বন্ড ভূমিকায় এ পর্যন্ত অভিনীত মোট সাতজনের মধ্যে সর্বাধিক মুভি নিজের অর্জনে রেখেছেন রজার মুর, যার জেমস বন্ড হিসেবে অভিনীত মুভির সংখ্যা ৭।
এখন জেমস বন্ড মানেই ডেনিয়েল ক্রেইগ, যিনি ‘‘নো টাইম টু ডাই’’-সহ এ পর্যন্ত মোট ৫বার জেমস বন্ড হিসেবে মুভি করলেন। আর এটিই হতে যাচ্ছে তার অভিনীত শেষ জেমস বন্ড মুভি।
এক নজরে ‘‘নো টাইম টু ডাই’’
জেমস বন্ডের এই ২৫তম সংস্করণের পরিচালক ক্যারি জোজি ফুকুনাগা। পরিচালক ক্যারিসহ নিল পারভিস ও রবার্ট ওয়েড মুভিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন। যৌথ প্রযোজনায় ছিল ইউনিভার্সাল পিকচার্স, মেট্রো-গোল্ডউইন-মেয়ার ও ইয়ন প্রোডাকশন্স। ক্রেইগ এর সহশিল্পী হিসেবে শ্রেষ্ঠাংশে আছেন রামি মালিক, লিয়া সেডক্স, লশানা লিঞ্চ, রালফ ফিয়েন্স, ক্রিস্টোফ ওয়াল্টজ, বেন হুইশ, নাওমি হ্যারিস, এবং জফরি রাইট।
এখানে বন্ডকে দেখা যায় সিআইএ’র এক পুরোনো বন্ধুর সাহায্যার্থে রহস্যময় এক লোকের পিছু নিতে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে পরিবেষ্টিত সেই খলনায়ককে ধরাশায়ী করতে জনপ্রিয় নায়ক বন্ড নেমে পড়ে তার দক্ষতা ও বুদ্ধি নিয়ে। সাথে থাকছে দারুণ সব গ্যাজেটে ভরপুর গাড়ি নিয়ে গাড়ির পিছু ধাওয়া করা, শ্বাসরুদ্ধকর স্টান্ট এবং সেই চিরাচরিত ফর্মাল স্যুট পড়ে জিরো-জিরো-সেভেনের মুষ্টি যুদ্ধ।
এখন পর্যন্ত রেটিংয়ের দিক থেকে মুভিটি আইএমডিবিতে ৭.৬/১০ এবং রোটেন টমেটোর টমেটোমিটারে ৮৩%।
বক্স অফিসে ‘‘নো টাইম টু ডাই’’
তথাকথিত গল্প দেখেও যদি খুব আকর্ষণীয় মনে না হয় তাহলে নজর দেওয়া যেতে পারে বক্স অফিসের দিকে। দীর্ঘ ৫৮ বছর পরেও জেমস বন্ড ফ্রাঞ্চাইজির এই নতুন মুভিটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই আয় করেছে ১১৯.১ মিলিয়ন ডলার।
করোনাভাইরাস মহামারির পর এটিই প্রথম মুভি যা আয় শুধু চীনের মুভি ইন্ডাস্ট্রি ছাড়া সারা বিশ্বব্যাপী ১০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
মুভিটি নির্মাণে খরচ হয়েছিল প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার যা এর আগের মুভি স্পেক্টার থেকে ৫ মিলিয়ন বেশি। ২০১২ সালের স্কাইফল এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি উপার্জনকারী জেমস বন্ড মুভি। তার পরবর্তী মুভি স্পেক্টার আছে দ্বিতীয় অবস্থানে। এখন এই মহামারি বিপর্যস্ত সময়ে ‘‘নো টাইম টু ডাই’’ কি পারবে স্কাইফলকে টেক্কা দিতে- এ প্রশ্ন কোটি কোটি ভক্ত ও সমালোচকদের মনে।
অবশেষে
শুক্রবার থেকে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমাস এবং স্টার সিনেপ্লেক্সের সবগুলো শাখায় ‘‘নো টাইম টু ডাই’’ মুভির প্রিমিয়ার শো চলবে। এছাড়া বিশ্বজুড়ে যে ১০টি ভাষায় এর ট্রেইলার প্রকাশ পেয়েছিলো সেগুলোর মধ্যে বাংলাও একটি। চলচ্চিত্র জগতের সমালোচকরা এই মুভিটি নিয়ে বেশ আশাবাদী এবং তাদের বিঃশ্বাস যে, এই চলচ্চিত্রটি সিনেমাহল গুলোতে আবারও প্রাণ ফিরিয়ে আনবে।
মতামত দিন