ধর্ষণের অভিযোগে একজন এবং সহায়তার অভিযোগে ভুক্তভোগীর আরেক মামাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে
আপন বোনের ১৪ বছর বয়সী মেয়েকে (ভাগ্নী) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ভুক্তভোগীর এক মামার বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে, ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে জোর করে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করায় আরেক মামা। এরপর মৃত নবজাতককে গোপনে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
জানা যায়, চাঁদপুরের বাড়িতে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয় মেয়েটি। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে আসা হয় কুমিল্লার লাকসামে। অভিযান চালিয়ে কুমিল্লা ও চাঁদপুর থেকে বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) এই দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন ঢাকা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি উল্লিখিত সময়ে ভুক্তভোগীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়লে তার মা তার আপন ভাইকে (অভিযুক্তের বড় ভাই) বিষয়টি জানান।
কোনো সুরাহা না করে অভিযুক্তের বড় ভাই ভুক্তভোগী পরিবারটিকে সমাজ থেকে বিতাড়িত করার ভয়-ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি কাউকে জানাতে নিষেধ করে।
এরপর সে পরিবারটিকে কুমিল্লার লাকসামে একটি ভাড়া বাড়িতে জোরপূর্বক নিয়ে যায় এবং সেখানে গর্ভপাত করানোর জন্য ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক ওষুধ খাওয়ায়। এ বছরের ২৪ মে ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় পেটে ব্যথা শুরু হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভুক্তভোগী একটি মৃত সন্তান প্রসব করে।
অভিযুক্তের বড় ভাই মৃত নবজতাকটিকে গোপনে মাটিচাপা দেয়।
এদিকে, অকাল গর্ভপাতে ভুক্তভোগী কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার মা আবারও অভিযুক্তের বড় ভাইকে বিষয়টি জানান এবং মেয়ের চিকিৎসার জন্য সাহায্য চান।
এবারও পরিবারটিকে কোনো সাহায্য না করে তাদেরকে লাকসামের ভাড়া বাড়ি থেকে চাঁদপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মূল অভিযুক্তকে গা-ঢাকা দিতে সহায়তা করে তার বড় ভাই বিষয়টি কারও কাছে না বলার জন্য ভুক্তভোগী পরিবারকে চাপ দিতে থাকে।
কুমিল্লা র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, নির্যাতিত মেয়ের মা বিষয়টি আত্মীয়স্বজন এবং স্থানীয় বিভিন্ন লোকজনকে জানিয়ে সামাজিকভাবে কোনো প্রতিকার ও সহযোগিতা পাননি। এক সপ্তাহ আগে বিষয়টি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে র্যাবকে জানান তিনি। অভিযোগ পেয়ে র্যাব তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে থাকে।
গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্য এবং প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় এবং চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধের বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদপুরের কচুয়া থানায় মামলা হয়েছে।
মতামত দিন