গরুটির বর্তমান ওজন ২৩ কেজি এবং উচ্চতা ২২ ইঞ্চি
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের হায়াতখারচালা গ্রামের আড়ালিয়া ভিটার কৃষক আবুল কাশেমের বাড়িতে প্রতিদিন আসছেন শত শত মানুষ।
“টুনটুনি” নামের ১৩ মাস বয়সী একটি খর্বাকৃতির বাছুর দেখতেই এই আনাগোনা। আবুল কাশেমের একমাত্র ছেলে আদর করে এর নাম দিয়েছে “টুনটুনি”।
এই কৃষকের গোয়ালে থাকা একটি দেশি গরুর নবম বাছুর টুনটুনি। এর আগে টুনটুনির মা আরও আটটি বাছুরের জন্ম দেয়। সেই বাছুরগুলো স্বাভাবিক আকৃতির হলেও শেষ বাছুরটি খর্বাকৃতির হয়েছে।
আবুল কাশেম জানান, জন্মের পর বাছুরটির ওজন ছিল দেড় থেকে দুই কেজি। বর্তমানে ওজন ২৩ কেজি এবং উচ্চতা ২২ ইঞ্চি হয়েছে।
আরও পড়ুন- মৃত্যুর ৩৯ দিন পর গিনেস বুকে জায়গা পেল সেই ‘রানি’
তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে কৃষিকাজের পাশাপাশি গরু পালন করে আসছেন। তবে এমন বাছুর আগে দেখেননি।
জন্মের পর বাছুরটি বাঁচবে কি-না তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলেন তারা। বাছুরটি এতই ছোট ছিল যে একা দুধ খেতে পারত না। তাই কোলে তুলে মায়ের দুধ খাওয়ানো হয়েছে টুনটুনিকে।
কাশেম বলেন, প্রথম দিকে একটু বড় হলেও ৬ মাস পর থেকে বাছুরটির বৃদ্ধি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
তার স্ত্রী জরিনা বেগম জানান, প্রথম দিকে বাছুরটির তেমন যত্ন নেওয়া না হলেও আস্তে আস্তে সবার মায়া হয়ে গেছে ওর জন্য। বাছুরটি প্রতিদিন ঘাস, ভূষি, কুঁড়া, লবণ খায়।
তিনি জানান, গত এক মাস যাবত প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ দর্শণার্থী বাছুরটি দেখতে তাদের বাড়িতে আসেন।
মো. নজরুল ইসলাম নামে এক দর্শনার্থী বলেন, এরকম ছোট আকারের বাছুর আগে দেখেননি। তাই দেখতে এসেছি।
প্রতিবেশী শামসুন্নাহার বলেন, আকৃতিতে ছোট হওয়ার জন্যই টুনটুনিকে সবাই বাছুর বলে।
কৃষক আবুল কাশেমের ছেলে সজীব বলেন, আগে নাম ধরে ডাক দিলে বাছুরটি সাড়া দিত। কিন্তু এখন বাড়িতে প্রতিদিন দর্শনার্থী যাতায়াত করায় বাছুরটির মধ্যে ভীতি তৈরি হয়েছে। ডাকলে আর সাড়া দেয় না।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুকুনুজ্জামান বলেন, “দেশি জাতের একটি বাছুর সাধারণত জন্মের পরই ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের হয়। আর এক বছর বয়সের মধ্যেই ৮০ থেকে ১০০ কেজি হতে পারে। কিন্তু এই বাছুরটির ক্ষেত্রে ওজন কিংবা উচ্চতা বাড়েনি। বাছুরটি খর্বাকৃতির গরু। ক্ষুদ্রাকৃতির গরু হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডও হয়ত করতে পারে।”
তিনি আরও জানান, বাছুরটি ঠিক কী কারণে এমন আকারের হয়েছে তা গবেষণার বিষয়। তাই এখনই বলা যাচ্ছে না।
এর আগে, ঢাকার সাভারের একটি খামারে থাকা খর্বাকৃতি গরু ‘রানি’ গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নেয়। তবে গত ১৯ আগস্ট হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যায় গরুটি। মৃত্যুর ৩৯ দিন পর রেকর্ড বইয়ে নাম ওঠে তার।
মতামত দিন