অনলাইনে ছড়ানো মিথ্যা তথ্য মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করছে এমনকি তাদের সামাজিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখছে
প্রতি পাঁচজনে একজন মেয়ে অনলাইনে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের জন্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল।
বিশ্বের ২৬টি দেশের ২৬ হাজারেরও বেশি কন্যাশিশু, কিশোরী ও তরুণীর ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল জানায়, করোনাভাইরাস কিংবা রাজনৈতিক কোনো বিষয়, যে কোনো বিষয়েই মেয়েদের সম্পৃক্ত হওয়ার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে অনলাইনে ছড়ানো এসব ভুল তথ্য।
বিশ্বব্যাপী পরিচালিত এই গবেষণায় অংশ নেওয়া ১০ জন কিশোরী ও তরুণীর মধ্যে ৯ জনই জানিয়েছে, তাদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে অনলাইনে প্রচারিত এসব ভুল তথ্য।
গবেষণার জন্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৮টি দেশের কন্যাশিশু, কিশোরী ও তরুণীর সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘টিকটকে’ শ্লীলতাহানির ভিডিও, মামলা না নেওয়ায় আত্মহত্যার হুমকি স্কুলছাত্রীর
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের মতে, এই গবেষণাটি মেয়েদের জীবনে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রভাব কেমন তাই তুলে ধরা হয়েছে।
এদিকে, জরিপে অংশ নেওয়া ৬৫% কিশোরী ও তরুণীর মতে মিথ্যা তথ্য সবচেয়ে বেশি ছড়ায় ফেসবুকে। পাশাপাশি ছড়ানো হয় টিকটক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইউটিউবে।
অন্যদিকে, গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, প্রতি তিনজন মেয়ের একজন অনলাইনে মিথ্যা ও ভুল তথ্যের জন্য শঙ্কিত, আতঙ্কিত ও চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং নিজেদের অনিরাপদ মনে করেন তারা।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ২৮% মেয়েই অনলাইনে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ভুল তথ্য ও কুসংস্কার বিশ্বাস করে নিয়েছে।
এছাড়া, ২৫% মেয়ে অনলাইনেই প্রশ্ন করেছে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন গ্রহণ করা ঠিক হবে কি-না। আর এর ফলে শারীরিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
অনলাইনে মিথ্যা তথ্যে মেয়েরা এতোটাই উদ্বেগে থাকে যে ১৯% কিশোরী ও তরুণী নির্বাচনের ফলাফলও বিশ্বাস করতে পারেন না। আর এর ফলে রাজনৈতিক বা সাম্প্রতিক ঘটনাবলির সঙ্গেও যুক্ত হওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে ৪৮% অংশগ্রহণকারীই জানিয়েছেন, তারা পরিবারের সদস্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোকে নির্ভরযোগ্য তথ্যের উৎস হিসেবে বিশ্বাস করে। তবে অংশগ্রহণকারীদের কেউই অনলাইনকে নির্ভরযোগ্য তথ্যের উৎস মনে করে না।
জরিপে অংশগ্রহণকারী আঁচল নামে এক বাংলাদেশি তরুণী (২১) বলেন, আমি সেইসব অ্যাকাউন্ট আনফলো করে দিই যেগুলো থেকে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে পারে।
প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের জেন্ডার ট্রান্সফরমেটিভ পলিসির নির্বাহী পরিচালক ভাগ্যশ্রী ডেংগলে এ বিষয়ে জানান, অনলাইনে ছড়ানো মিথ্যা তথ্য মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করছে, তাদের সামাজিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখছে। বাস্তবেও এর প্রভাব অত্যন্ত ক্ষতিকর।
মতামত দিন