অতিথি পাখির শিকার, সংগ্রহ বা দখলে রাখলে অথবা বেচা-কেনা করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে
নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিলে শিকারিদের হাত থেকে প্রায় অর্ধশত বককে মুক্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) ভোরে বিলের দুর্গম এলাকা থেকে পাখিসহ ছয় শিকারীকে আটক করেন চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সদস্যরা। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের সাত হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে এসব শিকারীর কাছ থেকে মুচলেকা নেন সিংড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রকিবুল হাসন।
চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার ভোরে চলনবিলের গুনাইখাড়া, দীঘলগ্রাম ও নলবাতা বিলের ধানক্ষেতে কলা ও খেজুর পাতার তৈরি পাখি ধরার কিল্লা ঘরে পাখি শিকার হচ্ছে খবর পেয়ে অভিযানে যান পরিবেশ কর্মীরা। পরে বিলের দুর্গম এলাকা থেকে অর্ধশত বকপাখিসহ ছয় শিকারীকে আটক করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় ও আর কোনোদিন পাখি শিকার করবে না মর্মে মুচলেকা নেওয়া হয়।
ভেঙে ফেলা হয় পাখি ধরার প্রায় ৩০টি কিল্লা ঘর। পাশাপাশি দীঘলগ্রাম ও নলবাতা বাজারে জনসচেতনতায় লিফলেট বিতরণ ও পথসভা করা হয়। এদিকে সকাল সাড়ে ১০টায় চলনবিল গেট এলাকার একটি পাখি কলোনীতে উদ্ধার করা পাখিগুলো অবমুক্ত করা হয়।
বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত। একই অপরাধ ফের করলে শাস্তি ও জরিমানা দ্বিগুণের বিধানও রয়েছে। এছাড়া কোনো ব্যক্তি অতিথি পাখির মাংস ও দেহের অংশ সংগ্রহ বা দখলে রাখলে অথবা বেচা-কেনা করলে তাকে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
এছাড়া কোনো ব্যক্তি অতিথি পাখির মাংস ও দেহের অংশ সংগ্রহ বা দখলে রাখলে অথবা বেচা-কেনা করলে তাকে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
মতামত দিন