প্রতিবেদনে মিন্টুর ওই সংস্থাটির সঙ্গে সম্পৃক্ততার ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি
প্যান্ডোরা পেপারসে নাম এসেছে বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর। রবিবার (৩ অক্টোবর) ফাঁস হওয়া ফাইলগুলোতে নেপালের ব্যবসায়ী বিনোদ চৌধুরীর অংশীদার হিসেবে তার নাম এসেছে। নেপালি টাইমসের মতে, বাংলাদেশি ব্যবসায়ী এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল মিন্টু বিনোদ চৌধুরীর কোম্পানি “সিনোভেশন ইনকর্পোরেটেড”-এর সঙ্গে জড়িত।
তবে, প্রতিবেদনে মিন্টুর ওই সংস্থাটির সঙ্গে সম্পৃক্ততার ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)-এর একটি বৈশ্বিক তদন্তে জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়ী ব্যক্তিবর্গ অর্থ পাচারের জন্য করের আশ্রয় নিচ্ছেন। প্যান্ডোরা পেপারসে তথ্যানুযায়ী, বিনোদ চৌধুরীর বিভিআই-তে স্ত্রী এবং তিন ছেলে নির্বাণ, বরুণ এবং রাহুলের নামে কোম্পানি রয়েছে।
নেপালি টাইমসে আরও বলা হয়, চৌধুরী পরিবার সিনোভেশন ইনকর্পোরেটেড, সিজি হোটেলস অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড, বিভিআই-তে সেন্সেই ক্যাপিটাল পার্টনার্স ইনকর্পোরেটেড এবং সিজি হসপিটালিটি হোল্ডিংস গ্লোবাল পিটিই লিমিটেড নিবন্ধিত করেছে।
প্যান্ডোরা পেপারসে কোম্পানির চিঠিপত্র, শেয়ার এবং অর্থ স্থানান্তর এবং চৌধুরী পরিবারের সদস্য এবং অংশীদারদের মধ্যে অন্যান্য লেনদেনের বিবরণ রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখিত কিছু নাম পাকিস্তানি, সিঙ্গাপুরীয়, শ্রীলঙ্কান এবং বাংলাদেশিদের।
দ্য প্যারাডাইস পেপারস
এর আগে, ২০১৭ সালে ফাঁস হওয়া প্যারাডাইস পেপার্সের তালিকাতেও মিন্টুর নাম ছিল। মিন্টু তার এনার্জি কোম্পানি “এনএফএম এনার্জি লিমিটেড” এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা বাংলাদেশে মাল্টিমোড গ্রুপের ঠিকানা ব্যবহার করে। যা বারমুডা ট্যাক্স হেভেনে ১৯৯৯ সালের ৯ আগস্ট নিবন্ধিত ছিল।
মাল্টিমোড গ্রুপের কর্পোরেট ম্যানেজমেন্ট মিন্টু এবং তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত। এদের মধ্যে আবদুল আউয়াল মিন্টু, নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, তাবিথ মো. আউয়াল, তফসির মোহাম্মদ আউয়াল, তাজওয়ার মুহাম্মদ আউয়াল, ফয়সাল চৌধুরী, ফরিদা মোগল, শহীদ উল্লাহ, এবং সমীর আহমাদ বাংলাদেশের নাগরিক।
মিন্টুর বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন মানি লন্ডারিং এবং ঋণ চাঁদাবাজির অভিযোগে তদন্ত করেছিল। প্যারাডাইস পেপারসে বাংলাদেশ ভিত্তিক “ব্রুমার অ্যান্ড পার্টনার অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেড” নামে শুধুমাত্র একটি সংস্থা পাওয়া গেছে। যদিও বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি এমন সংগঠন কাজ করছে যেগুলো বারমুডা এবং অন্যান্য ট্যাক্স হেভেন দেশে অবস্থিত।
এছাড়া, ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের নামও প্যারাডাইস পেপারসে এসেছে। নথিতে দাবি করা হয়েছে, মুসা বিন শমসের ২০১০ সালে মাল্টায় “ভেনাস ওভারসিজ” নামে একটি কোম্পানি নিবন্ধন করেছিলেন।
শাহনাজ হুদা রাজ্জাক নামে আরেক বাংলাদেশি ১৯৯৯ এবং ২০০১ সালের মধ্যে মাল্টায় “ওশান আইস শিপিং” এবং “প্রিয়ম শিপিং” নামে দুটি কোম্পানি নিবন্ধন করেছিলেন।
দ্য পানামা পেপারস
২০১৬ সালে, আইসিআইজে কর্তৃক প্রকাশিত নতুন পানামা পেপারস ডাটাবেসে কমপক্ষে ২৪ জন, পাঁচটি প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ২০টি ঠিকানা পাওয়া গেছে। তালিকায় উল্লেখ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি হলো “বাংলাদেশ বিমান ইনকর্পোরেটেড”। যদিও বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান বিমান সংস্থার নাম “বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড” এবং এর আগের অফিসিয়াল নাম “বিমান বাংলাদেশ কর্পোরেশন” ছিল।
পানামা পেপারসে তালিকাভুক্ত অন্যান্য বাংলাদেশ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে-- “ইসলামিক সলিডারিটি শিপিং কোম্পানি বাংলাদেশ ইনক”, “বাংলাদেশ টেক্সটাইল এজেন্সি লিমিটেড”, “সোয়াইন ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড” এবং “সেভেন সিজ অ্যাসেটস লিমিটেড”।
মতামত দিন