ফখর উদ্দিনের নাতি আরিফুল স্কুল থেকে ফেরার পথে ছিঁড়ে পড়া বৈদ্যুতিক তারে স্পৃষ্ট হয়, নাতিকে রক্ষা করতে এগিয়ে গিয়ে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন-উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিজ চাউরা উত্তর গ্রামের মৃত হাজী ছইদ আলীর পুত্র ফখর উদ্দিন (৫৫) ও তার নাতি নিজ চাউরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ও কুয়েত প্রবাসী রুহুল আমিনের ছেলে আরিফুল ইসলাম (১০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার (৩ অক্টোবর) রাতে ঝড়বৃষ্টির কারণে বৈদ্যুতিক একটি লাইন ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়। সকাল ৮টার দিকে নিহত ফখর উদ্দিন তার নিজ মুঠোফোন থেকে পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে বিদ্যুৎ লাইন ছিড়ে পড়ার বিষয়টি জানালেও পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের কেউ তাতে কর্ণপাত করেননি। দুপুর সাড়ে ১২টায় ফখর উদ্দিনের নাতি আরিফুল স্কুল থেকে ফেরার পথে ছিঁড়ে পড়া বৈদ্যুতিক তারে স্পৃষ্ট হয়। নাতিকে রক্ষা করতে এগিয়ে গিয়ে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, নিহতদের উদ্ধার করার সময় একই গ্রামের ইন্তাজ আলীর পুত্র ফয়সল আহমদ (৩২) আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মর্মান্তিক এ ঘটনার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা কানাইঘাট পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিস ঘেরাও করে পল্লীবিদ্যুৎ মোড় এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন।
সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম একদল পুলিশ নিয়ে পল্লীবিদ্যুৎ মোড়ে গিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন।
পরে ইউএনও এবং ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং নিহত দুজনের পরিবারকে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেন।
ওসি তাজুল ইসলাম জানান, নিহতদের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কানাইঘাট পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম আখতার হোসেন জানান, বিদ্যুৎ লাইন ছেঁড়ার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করা হয়েছে। বন্ধ করার ফাঁকে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মতামত দিন