দোকানের কর্মচারীর বোন লাকী আক্তার পাখির পারিবারিক ঝামেলা মেটানোর সূত্রে লাকি আক্তারের সাথে সখ্যতা হয় শাহ আলমের। সেই থেকে প্রেম পরকীয়া সম্পর্ক
স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রীর নির্যাতনের শিকার প্রথম স্ত্রী। অভিযোগও করেছিলেন পুলিশের কাছে। সবকিছু স্বামীর সামনে ঘটলেও বিচার পাননি খায়রুন নাহার ঝুনু। অভিমানে শেষমেশ বেছে নিয়েছেন আত্মহননের পথ। নিহতের নাম খায়রুন নাহার ঝুনু (৪০)। ঘটনার পর থেকে তার স্বামী মো. শাহ আলম পলাতক রয়েছেন।
শনিবার (২ অক্টোবর) রাত ৩টায় কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলায় স্বামীর সাথে অভিমান করে দুই সন্তানের জননীর বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মাধবপুর গ্রামের মো. শাহ আলম বীজের ব্যবসা করেন নিমসার বাজারে। দোকানের কর্মচারীর বোন লাকী আক্তার পাখির পারিবারিক ঝামেলা মেটানোর সূত্রে লাকি আক্তারের সাথে সখ্যতা হয় শাহ আলমের। সেই থেকে প্রেম পরকীয়া সম্পর্ক। গত ১৪ জুন শহরের একটি বাসায় লাকি আক্তার ও শাহ আলমকে দেখতে পান প্রথম স্ত্রী খায়রুন নাহার। সেখানেই তাকে মারধোর করে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ স্বজনদের। এরপর সামাজিকভাবে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টাও ব্যর্থ হয়।
নিহত খায়রুন নাহারের বড় মেয়ে সামিয়া বলেন, “গত তিন বছর আগে আমার বাবা শাহ আলম প্রতিবেশী লাকি আক্তার পাখির সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে প্রায়ই আমার বাবা আমার মায়ের সাথে দুর্ব্যবহার করতো। এছাড়াও গত ১৪ জুন কুমিল্লা নগরীর মুন্সেফ কোয়ার্টার এলাকায় একটি বাসায় ওই মহিলা ও আমার বাবা আছে এমন খবরে আমার মা ওই বাসায় গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায়। ওইদিন লাকি আক্তার পাখির স্বজনরা আমার মাকে বেদম প্রহার করে। এ ঘটনার ৩ দিন পর আমার মা গত ১৭ জুন কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নারী ও শিশু নির্যাতন সেলে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।”
সামিয়া আরও বলেন, “গতকাল রবিবার রাতে মা বাবাকে বলে, হয় আমার সাথে না হয় ওই মহিলার সাথে থাকো। এ নিয়ে তর্কাতর্কির মাঝে আমার আম্মা রাত দেড়টায় গোপনে বিষপান করেন। পরে আমি বিষয়টি টের পেয়ে যাই। তখন আমার মা বলে তোমরা আমাকে মাফ করে দিও। পরে আমার আব্বু আম্মাকে এ্যাম্বুলেন্সে করে প্রথমে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান, পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নেওয়ার পথে আম্মা মারা যান।”
স্থানীয় সালিশি রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, “খায়রুন নাহারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা কয়েকবার সালিশে বসেছি। শাহ আলম তার দ্বিতীয় বিয়ের কথা কখনও স্বীকার করেননি। এটা তার প্রতারণা ছিল। তার প্রথম স্ত্রী বেশ কয়েকবার দ্বিতীয় স্ত্রী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হন।”
দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমরা আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় লাশ উদ্ধার করি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছি। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়েরসহ অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।
মতামত দিন