তাকে স্থায়ীভাবে শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা
১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ ওঠা সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে সব পরীক্ষা।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম সিন্ডিকেট বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের (ভিসি) অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেজারার আব্দুল লতিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর আবু মো. দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব-৩ সৈয়দা নওয়ারা জাহান ও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. সোহরাব আলী।
আরও পড়ুন- রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে ১৪ ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ
চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় সভায় উপস্থিত সদস্যরা দুঃখ প্রকাশ করেন বলেও রেজিস্ট্রারের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ফারহানা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে পরবর্তী সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, সংবিধি, প্রবিধি, নীতিমালা এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন- জোরপূর্বক চুল কাটায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষার্থীর অনশন
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার বিষয়টি বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করলে তা মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ২৭ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মঙ্গলবার রাতে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল বোর্ডের সদস্য পদ থেকে স্থায়ীভাবে পদত্যাগ করেন ফারহানা ইয়াসমিন। এতে শিক্ষার্থীরা কিছুটা শান্ত হন।
আরও পড়ুন- চুল কাটার অভিযোগ অস্বীকার, উল্টো ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনলেন ফারহানা
কিন্তু ওইদিন রাতে তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে বলেন, ‘‘আমি যাদের চুল কেটে দিয়েছি তাদেরকে চিনি না। তারা আমার শিক্ষার্থী কি-না তাও বলতে পারব না।’’
এ বক্তব্যের পর আবারও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। স্থায়ীভাবে শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন তারা।
আরও পড়ুন-চুল কেটে দেওয়ার প্রতিবাদে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন
মতামত দিন