ডলফিনটির ময়নাতদন্তের জন্য শরীরের কিছু অংশ রেখে স্থানীয় বিট কর্মকর্তাকে মাটিচাপা দিতে বলা হয়েছে
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে আবারও ভেসে এসেছে ৭ ফুট দৈর্ঘ্যের শুশুক প্রজাতির একটি মৃত ডলফিন।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে সৈকতের দ্বিতীয় ঝাউবাগান পয়েন্টে ডলফিনটি দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্যদের খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে যান।
ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্যরা জানান, ৭ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২ ফুট প্রস্থের ডলফিনটির শরীরের মাথা ও লেজে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি জেলেদের জালের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে। তারা বিষয়টি মৎস্য বিভাগ ও বন বিভাগকে জানিয়েছেন।
পটুয়াখালী জেলা বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক তারিকুল ইসলাম জানান, ডলফিনটির ময়নাতদন্তের জন্য শরীরের কিছু অংশ রেখে স্থানীয় বিট কর্মকর্তাকে মাটিচাপা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে চলতি মাসের গত ২৩ সেপ্টেম্বর তেত্রিশকানি পয়েন্টে ৫ ফুট দৈর্ঘ্যের একটিসহ এ বছর বিভিন্ন প্রজাতির মোট ২১টি মৃত ডলফিন সৈকতে ভেসে আসে। তার আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর ৬ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি ও ২ সেপ্টেম্বর ১২ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি মৃত ডলফিন ভেসে আসে।
বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা ঢাকা ট্রিবিউনকে জানান, বাংলাদেশের নদী ও সমুদ্রসীমায় সাত প্রজাতির ডলফিনের আবাস রয়েছে।
বন্যপ্রাণীবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) জরিপের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, সমুদ্রের যে এলাকায় ডলফিন বিচরণ করে, সেখানে মাছের আনাগোনাও বেশি থাকে। এ কারণে জেলেরা অনেক সময় ডলফিনের গতিবিধির ওপর নজর রাখে ও সেসব এলাকায় জাল ফেলে। এতে অনেক সময় জালের ফাঁসে জড়িয়ে বা নৌযানের সোনারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডলফিনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ইদানিং কোনো কোনো দেশে প্লাস্টিক বর্জ্য খেয়ে তিমি বা ডলফিনের মৃত্যুর ঘটনাও দেখা গেছে।
ডলফিন রক্ষায় জেলে স্থানীয়দের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এই বন কর্মকর্তা বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী ডলফিন হত্যা করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা তিন লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে। এ ছাড়া মৃত ডলফিনের দেহাবশেষ অবৈধভাবে কারও কাছে পাওয়া গেলেও সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ডই হতে পারে।
মতামত দিন