পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক নারীর পাঁচ মাস বয়সী শিশুকে লালন-পালনের জন্য এনেছিলেন মৃত শামিমা আকতার
বগুড়ার নন্দীগ্রামে পালিত সন্তান নিয়ে দুই পরিবারের কলহের জেরে শামিমা আকতার (২৪) নামে এক নারী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি ওই শিশুটির পালক মা ছিলেন।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার রণবাঘা সোনাপুকুরিয়া গ্রামের বাড়ি থেকে শামিমার মরদেহ উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। তার স্বামীর নাম আজিজুল হক।
ঢাকা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, পালিত সন্তান নিয়ে দুই পরিবারে ঝগড়া ও মারপিটের জেরে আত্মহত্যা করেছেন ওই নারী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শামিমা আকতার তিন মাস আগে প্রতিবেশী পক্ষাঘাতগ্রস্ত রেহেনা বেগমের পাঁচ মাস বয়সী ছেলে আবদুল্লাহকে লালন-পালনের জন্য গ্রহণ করেন। তখন রেহেনা সন্তানের পেছনে খরচের জন্য ৩০ হাজার টাকা দেন শামিমাকে।
তবে শিশুর লালন-পালন নিয়ে কথায় কথায় ভুল ধরা হতো শামিমাকে। এতে বিরক্ত এক পর্যায়ে শিশুটির লালন-পালনে অস্বীকৃতি জানান তিনি। যার পরিপ্রেক্ষিতে রেহেনা তার দেওয়া ৩০ হাজার টাকাসহ ছেলেকে ফেরত চান। কিন্তু শামিমা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে রেহেনার বোন সফুরা বেগম ও ভাই বকুল বাড়িতে গিয়ে শামিমার কাছে টাকাসহ ভাগ্নে আবদুল্লাহকে ফেরত চান। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে শামিমাকে মারধর করে শিশুটিকে নিয়ে যান।
এ ঘটনার পর শামিমা তার স্বামী আজিজুল হকের কাছে মারধরের কথা জানিয়ে বিহিতের জন্য বলেন। কিন্তু আজিজুল বিচার করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। পরে বুধবার সকালে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় শামিমাকে দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্বজনেরা।
নন্দীগ্রাম সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রভাষক আবদুল বারী জানান, পালিত সন্তান নিয়ে দুই পরিবারে ঝগড়ার কথা শুনেছেন। তবে গৃহবধূ শামিমা কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন তা তিনি জানেন না।
ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
মতামত দিন