ভুক্তভোগীর অভিযোগ, পুরো বোতল শেষ করার জন্য তাকে এভাবে টিকা দেওয়া হয়েছিল। টের পেয়ে ভয় পেয়ে যান তিনি
সাতক্ষীরার বল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গৌতম রায় নামের এক ব্যক্তিকে চারবার টিকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার বল্লী ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী নাজমুন নাহার এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ গৌতমের।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলার আমতলা গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী গৌতম রায় জানান, টিকা নিতে তিনি এদিন সকালে বল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে যান। সেখানে তাকে পরপর চারবার টিকা দেওয়া হয়। টিকার পুরো বোতল শেষ করার জন্য তাকে এভাবে টিকা দেওয়া হয়েছিল। বুঝতে পেরে ভয় পেয়ে যান তিনি।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত বলেন, “গৌতম রায়কে আমি ডেকে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে না একাধিক টিকা হয়েছে। অন্যেদের ডেকে দেখিয়েছি কিন্তু চার ডোজ দেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। তবে এলার্জিজনিত কারণে এরকম দাগ হতে পারে বলে ধারণা করছি। এই ঘটনায় তদন্ত করে জানা গেছে, তাকে একবারই টিকা দেওয়া হয়েছে।”
অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী বলছেন, ২০ বছরের বেশি সময় ধরে টিকা দিয়ে যাচ্ছি এমন ভুল হতে পারে না।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে করোনাভাইরাসের গণটিকা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে সাতক্ষীরার ৮৭টি কেন্দ্রে করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া শুরু হয়। গণটিকা কর্মসূচি চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। জেলায় দুইদিন ব্যাপী এই ক্যাম্পেইনে এক লাখ ২১ হাজার টিকা দেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কার্যালয় শহরের আমতলা এলাকায় মানুষের টিকা নিতে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। টিকা নিতে আসা জায়েদুল ইসলাম বলেন, “নিরাপদ থাকতে গেলে টিকা নেওয়ার বিকল্প নেই। সে কারণে টিকা নিতে এসেছি। করোনাভাইরাস এখন কোনো ভয় বা আতঙ্ক নয়, সচেতন হলেই এটি থেকে মুক্ত থাকা যায়।”
টিকা নিতে আসা ফাতেমা বেগম বলেন, “আমি রেজিস্ট্রেশন করেছিলাম তবে মোবাইলে কোনো মেসেজ আসেনি। করোনাভাইরাসের গণটিকা দেওয়া হচ্ছে মাইকিং শুনে এখানে টিকা নিতে এসেছি।”
পৌরসভার কাউন্সিলর কায়সারুজ্জামান হিমেল জানান, টিকার প্রতি প্রথমদিকে মানুষের অনাগ্রহ থাকলেও এখন আগ্রহ বেড়েছে। প্রচুর মানুষ টিকা নিতে আসছে। তবে চাহিদার তুলনায় টিকার সরবরাহ অনেক কম।
সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম বলেন, সাধারণ মানুষের টিকা নিতে প্রচুর আগ্রহ। তবে যে পরিমাণ মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী সেই পরিমাণ টিাকা প্রদান করা হচ্ছে না। আমার ইউনিয়নে ১৫০০ টিকা দেওয়া হচ্ছে।
তবে প্রতিটি টিকা কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হয়েছে। অনেকেরই মাস্কবিহীন অবস্থায় দেখা গেছে। শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অজয় কুমার সাহা বলেন, “উপজেলাব্যাপী ১৫ হাজার টিকা দেওয়া হবে। যেহেতু দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সে কারণে দুইদিন ব্যাপী এই ক্যাম্পেইন চলবে। টিকার কেন্দ্রেগুলোতে ভিড়ের কারণে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে।”
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত জানান, ৭৮টি ইউনিয়ন পরিষদ ও সাতক্ষীরা পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে এক লাখ ২১ হাজার করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়নে ১৫০০ জন ও পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫০০ জনকে প্রথম ডোজের এই টিকা দেওয়া হবে। মঙ্গলবার ও বুধবার, এই দুই দিন ক্যাম্পেইন চলবে। যাদের রেজিস্ট্রেশন রয়েছে তারাই কেন্দ্রে গিয়ে এই টিকা নিতে পারবেন।
মতামত দিন