মন্দিরটি ভেঙে ফেলে সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণের পায়তারা চলছে
ভারতের রাজধানী দিল্লির জামিয়ানগরের নুরনগর এলাকায় হিন্দুদের একটি পুরোনো মন্দির ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি। আর তাদের হাত থেকে মন্দিরটি রক্ষা করতে এলাকার মুসলিম বাসিন্দারা দ্বারস্থ হয়েছেন দিল্লি হাইকোর্টের। এছাড়া এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেন সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছড়িয়ে না পড়ে, আদালতের কাছে সেই আবেদনও জানিয়েছেন মুসলিমরা। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া ওই প্রতিবেদনে বলেছে, নয়াদিল্লির জামিয়ানগর এলাকার ২০৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির কিছু বাসিন্দা সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে জানিয়েছেন, ১৯৭০ সালে নুরনগরে তৈরি হয়েছিল এই মন্দিরটি। তারপর থেকে প্রতিদিনই সেখানে পূজা ও কীর্তন হয়ে আসছে। এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তি স্থানীয় দুষ্কৃতীকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মন্দির চত্বরে থাকা ধর্মশালাটি রাতারাতি ভেঙে ফেলেছে। এছাড়া তারা মন্দিরটি ভাঙার জন্য ভেতরে থাকা ৮ থেকে ১০টি মূর্তিও রাতারাতি সরিয়ে ফেলেছেন। মন্দিরটি ভেঙে ফেলে সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করাই তাদের লক্ষ্য। মন্দিরটি যাতে ভাঙা না হয় তাই আবেদনে আদালতের হস্তক্ষেপের অনুরোধ করেন আবেদনকারীরা।
ফৌজুল আজিম নামে একজন বাসিন্দা জানান, এই কমিটি যে ভবন নির্মাণ এবং ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য মন্দিরটি ভেঙে ফেলছে তা নয়। এর উদ্দেশ্য হল এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে অর্থ উপার্জন করা।
অ্যাডভোকেট নিতিন সালুজারের দায়ের করা আবেদনে যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, “নুরনগর এলাকাটি মুসলিম ঘনবসতিপূর্ণ তবে সেখানে ৪০ থেকে ৫০ পরিবার অমুসলিম (হিন্দু) রয়েছেন। তবে এটি গুরুত্বপূর্ণ যে উভয় সম্প্রদায়ই এখানে অসাম্প্রদায়িক এবং ভ্রাতৃত্ব বন্ধ নিয়ে বছরের পর বছর ধরে বসবাস করছে। দুর্বৃত্তরা উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব এবং সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে, ” যুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
আবেদন শুনানি শেষে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব সচদেবের বেঞ্চ দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে, কোনো অবৈধ প্রক্রিয়ায় মন্দির চত্বর থেকে যাতে কোনও কিছু উচ্ছেদ না করা হয়। মন্দিরটিও যেন অক্ষত অবস্থায় থাকে। এলাকায় যাতে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় থাকে, পুলিশকে তা দেখতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
মতামত দিন