মুক্তিপণ আদায় করতে ফয়সাল হোসেন (১৫) নামের এক দোকান কর্মচারীর হাতের নখ উপড়ে ফেলার অভিযোগে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের আট নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এক ব্যবসায়ী
নাটোরে মুক্তিপণ আদায় করতে ফয়সাল হোসেন (১৫) নামের এক দোকান কর্মচারীর হাতের নখ উপড়ে ফেলার অভিযোগে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের আট নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এক ব্যবসায়ী। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনসুর রহমান।
মোহাম্মদ মনসুর রহমান বলেন, “অভিযুক্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন, নাটোর সদর উপজেলার নবীনগর গ্রামের একরাম হোসেন ওরফে সুমন (৩৫) এবং শহরের চকরামপুর মহল্লার মো. আবির হোসেন (২৬)। ভুক্তভোগী ফয়সাল ও মুক্তিপণ হিসেবে দেওয়া ব্যবসায়ী আব্দুস সালামের আর-ওয়ান-ফাইভ মডেলের মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে। আহত ফয়সালকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।”
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, নাটোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রনি আহমেদ, তার ভাই যুবলীগ সদস্য রবিউল আওয়াল বাপ্পি, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ হিল শুভ।
ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, “অনেক দিন থেকেই ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে একরাম হোসেন সুমনের সঙ্গে আমার বিরোধ ছিল। এর জের ধরে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের স্টেশন বাজার এলাকা থেকে মো. আবির এবং সুমনের সহযোগিতায় রবিউল আওয়াল বাপ্পি, মোহাম্মদ মনি তাকে ও তার দোকানের কর্মচারী ফয়সালকে মোটরসাইকেলে তুলে শহরের কানাইখালী এলাকায় যুবলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর দোকান কর্মচারী ফয়সালকে চোর দাবি করে আমার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আমার সামনেই ফয়সালের বাম হাতের তর্জনী আঙুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়। এ সময় বাড়ি থেকে আমার স্ত্রীর গয়না নিয়ে আসতে বলা হয়।”
ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম জানান, তিনি তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি এ সময় অভিযুক্তদের দিয়ে দিলেও তারা আরও দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পুলিশকে জানালে মেরে ফেলা হবে বলেও এ সময় তারা হুমকি দেয়।
তিনি বলেন, “টাকা জোগাড় করতে না পেরে বাধ্য হয়ে নাটোর থানা পুলিশকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানাই। ঘটনা শুনে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং ফয়সাল ও মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে।”
নাটোর জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব বলেন, “এটি একটি নৃশংস ঘটনা। এমন ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, “দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
মতামত দিন