তাদের প্ররোচনায় সাবেক এক সেনাসদস্য আত্মহত্যা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ
শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে জড়িত থাকলেও আড়ালে মানুষকে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন দুই নারী। রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মজিবুর রহমানকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অভিযুক্তরা হলেন- আইরিন ইয়াসমিন লিজা (৩৪) ও শামীমা আক্তার (২৪)। আইরিনের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার বালিচ গ্রামে। আর শামীমা ঢাকার সাভারের ডেন্ডাবর নতুনপাড়ার বাসিন্দা। দুইজনেই সাভারের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক।
রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
সোমবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, মজিবুর রহমান রাজশাহীতে প্লট কেনাবেচা এবং প্রাইভেটকার ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা করতেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি নগরীর উপশহরের দুই নম্বর সেক্টরের একটি ভাড়া বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ছেলে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন। সেই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে দুই নারী শিক্ষকের সম্পৃক্ততার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। এরপরই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে মৃত মজিবুর রহমানের মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে।
কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, “শিক্ষকতা পেশার আড়ালে এ দুই নারী মানুষকে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করতেন। জিজ্ঞাসাবাদে আইরিন জানিয়েছেন, মজিবুর রহমানের সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। ৬ ফেব্রুয়ারি তারা দুজন স্বেচ্ছায় মজিবুরের বাড়ি এসেছিলেন। রাতে তারা মজিবুরের পাশের ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। তখন মজিবুর রহমান মেসেঞ্জারের মাধ্যমে আইরিনকে তার ঘরে ডাকেন। আইরিন না গেলে মেসেঞ্জারেই তাদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরপর মজিবুর জানান, রাত ৩টার মধ্যে আইরিন না গেলে তিনি আত্মহত্যা করবেন। তখন আইরিন মেসেঞ্জার এবং এসএমএসের মাধ্যমে মজিবুর রহমানকে ‘মরতে’ বলেন। অভিমানে মজিবুর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে সকালে আইরিন ও শামীমা তার ঝুলন্ত লাশ দেখে বাড়ি থেকে মজিবুরের মোবাইল ফোন, বাড়ির চাবি এবং নগদ চার লাখ টাকা ও কিছু কাগজপত্র নিয়ে পালিয়ে যান।”
সংবাদ সম্মেলনে আরএমপি কমিশনার বলেছেন, এ দুই নারী ব্ল্যাকমেইল চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। দুইজনকে মজিবুরের আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মতামত দিন