শুধুমাত্র স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের জন্যে সপ্তাহে পাঁচ দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ঢাবি গ্রন্থাগার
দীর্ঘ দেড় বছর পর খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার। রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় গ্রন্থাগারের মূল ফটক খুলে দেওয়া হয়। অন্তত এক ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণের প্রমাণপত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র দেখিয়ে গ্রন্থাগারে প্রবেশ করছে শিক্ষার্থীরা। তবে গ্রন্থাগারে বাইরে থেকে কোনো বইপত্র ভেতরে নেওয়া যাচ্ছে না৷
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় করোনাভাইরাসের অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে কেবলমাত্র স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও সেমিনার গ্রন্থাগারগুলো খুলে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রবিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার (বিজ্ঞান শাখাসহ) ও বিভাগ-ইনস্টিটিউটের সেমিনার গ্রন্থাগারগুলো খুলে দেওয়া হয়।
শারীরিক দূরত্ব মেনে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের জন্য গ্রন্থাগারের মূল ফটকে প্রতি তিন ফুট দূরত্বে বৃত্তাকার চিহ্ন দেওয়া হয়েছে। প্রথমে টিকার প্রমাণপত্র ও পরিচয়পত্র দেখিয়ে ঢুকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এরপর ভেতরে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ফটকের ভেতরে শিক্ষার্থীদের জন্য মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও রাখা আছে। গ্রন্থাগারের ফটকে স্বাস্থ্যবিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কঠোর নজরদারি করছেন গ্রন্থাগারের কর্মকর্তারা।
এখন থেকে রবিবার-বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সপ্তাহে পাঁচ দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও বিভাগ-ইনস্টিটিউটের সেমিনার গ্রন্থাগারগুলো খোলা থাকবে। তবে এ পর্যায়ে সেখানে শুধু স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করার সুযোগ পাবেন। ধাপে ধাপে অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরাও পড়ার সুযোগ পাবেন।
ঢাবি গ্রন্থাগারের ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক মো. নাসিরউদ্দিন মুন্সী জানান, গ্রন্থাগার খুললেও সেখানে শুধু স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক পড়াশোনা করতে পারবেন। বাইরে থেকে চাকরির বইপত্র, খাবার ইত্যাদি গ্রন্থাগারে নেওয়া যাবে না।
তিনি আরও জানান, গ্রন্থাগার ব্যবহারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আট দফা নির্দেশনা দিয়েছে। এগুলো হলো- বাধ্যতামূলকভাবে নিয়মিত ও সার্বক্ষণিক মাস্ক সঠিক নিয়মে নাক-মুখ ঢেকে পরা, স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী কমপক্ষে ১ মিটার (৩ ফুট) শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, ব্যবহারকারীদের বইয়ের তাকগুলোর কাছে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না, গ্রন্থাগারকর্মীরা তাদের প্রয়োজনীয় অনুসন্ধানে সহায়তা করবেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ইস্যু করা পাঠ্য উপকরণগুলোর নির্ধারিত সময় বর্ধিত করা হবে (শুধু শিক্ষকদের জন্য), গ্রন্থাগারে দলগত আলোচনা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, গ্রন্থাগারের ফটোকপি বা প্রিন্টার মেশিনগুলো আপাতত ব্যবহার করা যাবে না, গ্রন্থাগারের ভেতরে ও বাইরে শারীরিক দূরত্বের শর্ত মেনে চলতে হবে, গ্রন্থাগারে প্রবেশ ও বহির্গমনের জন্য আলাদা ফটক ব্যবহার করতে হবে এবং স্বাস্থ্যসুরক্ষার নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহৃত মাস্ক, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ডাস্টবিনে ফেলতে হবে।
মতামত দিন