পদ্মার পানি কমে তীব্র ভাঙন শুরু হলে বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়
রাজবাড়ীতে পদ্মার পানি কমে তীব্র ভাঙন দেখা দেওয়ায় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে জেলার চরসিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে সদর উপজেলার চরসিলিমপুর গ্রামে ভাঙন শুরু হলে ১০০ মিটার এলাকার সিসিব্লক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সন্ধ্যার দিকে স্কুলের পাকা ভবনের পুরোটাই নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
চরসিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমান আলী ফকির বলেন, ‘‘১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল খোলার পর আমরা স্কুলের কার্যক্রম শুরু করি। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছিল। কিন্তু ভাঙন শুরু হওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তাই শিক্ষার্থী উপস্থিতি এমনিতেই কম ছিল এতদিন। কিন্তু আজ সকালে স্কুলের বাম পাশ থেকে ব্লক সরে যাওয়ায় সেটি ডুবে যেতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে পুরো ভবনটিই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেল। আমাদের টিনশেড ভবনটিও এখন ঝুঁকির মুখে।’’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফাহমি মো. সায়েফ বলেন, ‘‘স্কুলের জন্য পাশেই আমরা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি পেয়েছি। জমির মালিক স্বেচ্ছায় স্কুলের নামে জমিটি দিতে চেয়েছেন। আপাতত সেখানে টিনশেড ঘর তুলে স্কুলের কাজ পরিচালনা করা হবে। পরে স্থায়ী ভবন তৈরি করা হবে।’’
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাসিমার ভাষায়, ‘‘স্কুল ভবন নদীতে চলে যাওয়ায় আমাদের পড়াশোনার ক্ষতি হবে।’’
আরেক শিক্ষার্থী রুহুল বলে, ‘‘স্কুল না থাকলে আমরা কোথায় পড়াশোনা করব?’’
একই এলাকার বাসিন্দা সালমা আক্তার বলেন, ‘‘পদ্মার পানি কমার পর থেকে আমরা ভয়ে ছিলাম নদীর স্রোতের জন্য। দুপুর থেকে দেখি ভাঙন। আমরা তো অসহায়। আমাদের যাওয়ার আর জায়গা নেই। কয়েক দফা ভাঙনে আমাদের জমিজমা সব নদীতে চলে গেছে।’’
মিজানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান জানান, এই পদ্মার ভাঙনে এই স্কুল আজ বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও চরসিলিমপুর গ্রামের আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষ বাস্তুহারা হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর বলেন, ‘‘পদ্মায় পানি কমার ফলে বেড ম্যাটিরিয়াল সরে যাওয়ায় ব্লক ধসে যায়। আমরা ভাঙনের জায়গায় বালি ভর্তি জিও ব্যাগ (বালুর বস্তা) ফেলছি এবং আগামীকাল থেকে জিওটিউব ফেলার কাজ করব।’’
মতামত দিন