আহত যাত্রী জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
ময়মনসিংহের গফরগাঁও ট্রেন স্টেশনে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ বাজারগামী কমিউটার ট্রেনের ছাদে বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ট্রেনের দুই যাত্রী নিহত ও অপর এক এক যাত্রী আহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- জামালপুর পৌর শহরের বাগেরহাট বটতলা এলাকার মো. সাগর (২৫) ও জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ী মিতালী বাজার এলাকার নাহিদ হাসান (২৫)।
আহত অপর যাত্রী জেলার ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের মাছপাড়া গ্রামের মো.রুবেল (২৫)। বর্তমানে তিনি জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রুবেলের বরাত দিয়ে রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা জানান, ডাকাতরা ময়মনসিংহের গফরগাঁও স্টেশন থেকে দেওয়ানগঞ্জগামী ট্রেনে ওঠে। ছাদে থাকা তিনজনকে আক্রমণ করলে তারা ডাকাতদের নগদ টাকা এবং মোবাইল ফোন নিতে বাধা দেয়।
এসআই সোহেল বলেন, হামলাকারীরা প্রথমে নাহিদ ও সাগরকে ছুরিকাঘাত করে এবং পরে ময়মনসিংহ শহরের কেওটখালী রেল সেতুর কাছে ট্রেন থেকে নামার আগে রুবেলকে আক্রমণ করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ট্রেন যাত্রী রিকশাচালক শেরপুর জেলার ফারুক মিয়া ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “আমি টঙ্গী থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলাম। গফরগাঁও থেকে ট্রেন ছাড়ার পর ৭ জন ডাকাতের কাছে কমপক্ষে ২০-২৫ জন ছিনতাইয়ের শিকার হয়। তারা আমাকে ছুরি দেখিয়ে হুমকি দেওয়ায় আমি আমার সমস্ত জিনিসপত্র দিয়ে দিতে বাধ্য হই।”
তিনি আরও বলেন, “পরে যখন নাহিদ এবং অন্যদের মারধর করা হচ্ছিল, তখন আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও ট্রেনের শব্দের কারণে কেউ শুনতে পায়নি। জামালপুর পৌঁছার পর আমি আবারও অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করি। কিন্তু ডাকাতদের হাতে ছুরি থাকায় কেউ আর এগিয়ে আসেনি।”
নিহত নাহিদের স্ত্রী বিপাশা বলেন, “ট্রেনটি গফরগাঁও পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই আমি ডাকাতির খবর শুনি। জামালপুর পৌঁছানোর পর দেখি পুলিশ আমার স্বামীর লাশ নিয়ে যাচ্ছে।”
তিনি তার স্বামীর হত্যার বিচার দাবি করেন।
আরেক নিহত সাগরের বাবা হাফিজুর রহমান বলেন, “আমার ছেলে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিল। সে রাতে বাড়িতে না ফেরার পর আমরা তাকে খোঁজাখুঁজি করি এবং ট্রেন ডাকাতির কথা জানতে পারি। পরে আমরা হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার ছেলে মৃত।”
পুলিশ জানায়, ট্রেনের জানালায় রক্ত গড়িয়ে পড়তে দেখে একজন যাত্রী নিরাপত্তা কর্মীদের ব্যাপারটা জানান। পরে স্টেশন মাস্টার ট্রেনের উপরে উঠে তিনজনকে আহত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাদের জামালপুর শহরের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা নাহিদ ও সাগরকে মৃত ঘোষণা করেন।
মতামত দিন