দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩৬% শিশুই বিভিন্ন ধরনের অপুষ্টিতে ভুগছে
বাংলাদেশে ৬ থেকে ২৩ মাস বয়সী প্রতি তিন শিশুর মধ্যে মাত্র একজন পরিপূর্ণ খাবার খেতে পারে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত ইউনিসেফের এক জরিপে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইউনিসেফের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ গত এক দশকে এই সমস্যা সমাধানে কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করেছে, কিন্তু এখনও সমতার দূরত্ব বজায় রয়েছে। ধনী পরিবারের ৪৮% শিশুর সঙ্গে তুলনা করলে দরিদ্র পরিবারের মাত্র ২২% শিশুরা এমন একটি খাবার পায় যা ন্যূনতম খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে।
এছাড়া, দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩৬% শিশুই বিভিন্ন ধরনের অপুষ্টিতে ভুগছে।
ইউনিসেফের ৯১টি দেশের ওপরে করা তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৬ থেকে ২৩ মাস বয়সী শিশুদের অর্ধেক সংখ্যককে দিনে ন্যূনতম পরিমাণ সুষম খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। এছাড়া, মাত্র এক-তৃতীয়াংশ শিশু তাদের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম পুষ্টিকর খাবার পায়।
উপলব্ধ তথ্যসহ ৫০টি দেশের ওপর আরও বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, খাদ্যগ্রণের এই ধরনটি গত এক দশক ধরে অব্যাহত রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, কীভাবে কোভিড-১৯ মহামারি শিশুদের প্রয়োজনীয় খাদ্যগ্রহণ ব্যাহত করেছে এবং একই সঙ্গে অনেক পরিবারকে দারিদ্র্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিটি শিশুর জন্য পুষ্টিকর, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী মূল্যের খাদ্য সরবরাহের জন্য সরকার, দাতা, সুশীল সমাজের সংগঠন এবং উন্নয়নকর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।
এর মধ্যে রয়েছে-
> ফল, শাকসবজি, ডিম, মাছ, মাংস এবং সংরক্ষিত খাবারসহ পুষ্টিকর খাবারের প্রাপ্যতা এবং সামর্থ্য বৃদ্ধি ও উৎপাদন। যা বিতরণ এবং খুচরা বিক্রয়কে উৎসাহিত করে।
> অস্বাস্থ্যকর প্রক্রিয়াজাত ও অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার ও পানীয় থেকে ছোট শিশুদের রক্ষা করার পাশাপাশি শিশু ও পরিবারকে লক্ষ্য করে ক্ষতিকর বিপণন চর্চার অবসান ঘটাতে জাতীয় মানদণ্ড এবং আইন বাস্তবায়ন।
> ডিজিটাল মিডিয়াসহ একাধিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবারের চাহিদা বাড়ানো। যাতে সহজেই বাবা-মা এবং শিশুদের কাছে সহজ, সুসংগত তথ্য পৌঁছানো যায়।
বিবৃতিতে, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি টোমু হজুমি বলেছেন, “আমাদের অবশ্যই নিজেদের প্রচেষ্টা জোরদার করা অব্যাহত রাখতে হবে যাতে সব শিশুরা তাদের পূর্ণ বৃদ্ধি, বিকাশ এবং শেখার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন খাদ্য থেকে উপকৃত হতে পারে। শিশুদের জন্য পুষ্টিকর, নিরাপদ, বয়স উপযোগী এবং সাশ্রয়ী মূল্যের খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য খাদ্য ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্মেলন এবং বৃদ্ধির জন্য পুষ্টি শীর্ষক সম্মেলন বাংলাদেশের শিশুদের পুষ্টির উন্নতির প্রতি অঙ্গীকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার এবং বিগত দশকগুলোতে যে অগ্রগতি হয়েছে তা গড়ে তোলার দারুণ সুযোগ বলে তিনি মনে করেন।
মতামত দিন