বিয়ে বাড়ির ছবি তোলায় বিয়ে বাড়ির লোকজন হুজুরকান্দির চার থেকে পাঁচজন যুবককে মারধর করে এরপর বেধে যায় সংর্ঘষ
কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় বিয়েবাড়িতে ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার বড় ঘারমোড়া বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলার ঘারমোড়া ও হুজুরকান্দি গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ঘারমোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান মোল্লা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ঘারমোড়ার বাগাকান্দা গ্রামের একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে পাশ্ববর্তী হুজুরকান্দি গ্রামের কয়েকজন তরুণ মোবাইল ফোনে ছবি তোলেন। এই ছবি তোলা নিয়ে ওই রাতেই বিয়েবাড়ির লোকজন হুজুরকান্দির চার-পাঁচজন তরুণকে মারধর করেন। পরদিন সকালে ঘারমোড়ার বাগাকান্দা গ্রামের এক বয়স্ক ব্যক্তি দুধ বিক্রি করতে হুজুরকান্দিতে গেলে কয়েকজন তরুণ তাকে মারধর করেন।
এ ঘটনার ঘারমোড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে হুজুরকান্দি গ্রামের ১৫ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন।
যার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ হুজুরকান্দি গ্রামের বকুল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে ঘারমোড়া ও হুজুরকান্দি গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। পাল্টাপাল্টি মারধরের বিষয়কে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে হোমনার ঘারমোড়ার বাগাকান্দা ও হুজুরকান্দির গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
ঘারমোড়া গ্রামবাসীর দাবি, সংঘর্ষের সময় হুজুরকান্দি গ্রামের লোকজন তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে। গুলির আঘাতে তাদের গ্রামের একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে।
ঘারমোড়া গ্রামের আউয়াল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, “বৃহস্পতিবার হুজুরকান্দি গ্রামের কয়েকজন বখাটে ছেলে আমাদের বাড়িতে এসে মেয়েদের ছবি তুললে সেগুলো ডিলিট করা নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। শনিবার বাজারে গেলে হুজুরকান্দি গ্রামের লোকজন মো. সাব মিয়া নামের একজন মুরব্বিকে মারধর করে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আজকে সকালে হুজুর কান্দিগ্রামের লোকজন ইয়ারগান সহ দেশীয় অস্ত্রনিয়ে আমাদের গ্রামের লোকজন ওপর হামলা করে। তাদের গুলিতে দুইজনসহ সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে।“
এদিকে হুজুর কান্দিগ্রামের গোলাম মোস্তফা বলেন, “তরুণদের মধ্যে সমস্যার ঘটনা আমরা মিটমাট করার জন্য চেষ্টা করছিলাম। এই সময় ঘারমোড়া গ্রামের লোকজন আমাদের গ্রামের লোকজন ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়েছে। তবে কোনো গুলির ঘটনা ঘটেনি। তাদের ইটের আঘাতে আমাদের লোকজন আহত হয়েছে।“
চেয়ারম্যান শাহজাহান বলেন, “সংঘর্ষের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। তবে সংঘর্ষে দুই গ্রামের কতজন আহত হয়েছে, তার সঠিক তথ্য আমার কাছে নেই। শুনেছি যে কয়জন আহত হয়েছে তাদেরকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।“
এ বিষয়ে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আবুল কায়েস আখন্দ বলেন, “তিনদিন আগে বিয়ে বাড়িতে ছবি তোলা নিয়ে ঘারমোড়ার বাগাকান্দা ও হুজুরকান্দির গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। দুই গ্রামবাসীর সঙ্গে বসে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা চলছে।”
মতামত দিন