নামে-বেনামে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে ১৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট
টেকনাফ স্থলবন্দরে দৈনিক চুক্তিভিত্তিক ১৩০ টাকায় কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন নুরুল ইসলাম। পরে সেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে জড়িয়ে পড়েন দালালি সিন্ডিকেটের সঙ্গে। বর্তমানে ১৩০ টাকা দৈনিক মজুরিতে কাজ করা নুরুল ইসলম ৪৬০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক।
নুরুল ইসলাম ভোলা সদরের পশ্চিম কানাই নগরের মো. আব্দুল মোতালেবের ছেলে।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাবের যৌথ অভিযানে নুরুল ইসলাম (৪১) কে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
র্যাবের দাবি, টেকনাফ বন্দরে নিজের অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে চোরাকারবারি, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস ও দালালির কৌশল রপ্ত করেন নুরুল ইসলাম। বন্দরে দালালির বিভিন্ন সিন্ডিকেট গড়ে অবৈধভাবে অর্জন করেছে সাড়ে ৪শ কোটি টাকার বেশি সম্পদ। এছাড়াও নামে-বেনামে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে ১৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।
তিনি আরও জনান, এ সময় তার কাছ থেকে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ জাল নোট, ৩ লাখ ৮০ হাজার মিয়ানমারের মুদ্রা, নগদ ২ লাখ ১ হাজার ১৬০ টাকা ও ৪ হাজার ৪০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। নুরুল ইসলাম ইতোমধ্যে ঢাকা শহরে ৬টি বাড়ি ও ১৩টি প্লট কিনেছে। এছাড়াও সাভার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে বেনামে তার মোট ৩৭টি জমি, প্লট, বাগানবাড়ি ও বাড়ি আছে। তার অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের আনুমানিক পরিমাণ ৪৬০ কোটি টাকা।
নুরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, “সে ২০০১ সালে টেকনাফ স্থলবন্দরে দৈনিক চুক্তিভিত্তিক ১৩০ টাকা হারে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি নেয়। বন্দরে কর্মরত থাকার সময়ে নিজের অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে চোরাকারবারি, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস, দালালি ইত্যাদির কৌশল রপ্ত করে। একইসঙ্গে দালালির বিভিন্ন সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়। পরে নিজেই সেই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। ২০০৯ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে আস্থাভাজন একজনকে একই পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করে। চাকরি ছেড়ে দিলেও দালালি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রেখে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার আল মঈন বলেন, “নুরুল ইসলামের সঙ্গে কারবারিদের ইয়াবা বেচাকেনার তথ্যও আমরা পেয়েছি। তার ঢাকার বাসা থেকে ইয়াবাও জব্দ করা হয়েছে। কক্সবাজার ও টেকনাফ কেন্দ্রিক মাদক কারবারিদের সঙ্গে সখ্যতা রয়েছে। এছাড়া পাশ্ববর্তী দেশ কেন্দ্রিক বাণিজ্য করার সুবাদে সে দেশের দালালদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল। সে দেশের দালালদের মাধ্যমে জাল টাকার লেনদেন করত।”
মতামত দিন