নিঃসন্তান এক দম্পতি শিশুটিকে কিনে নেয়
গাজীপুরের শ্রীপুরে পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে আট মাসের শিশু জান্নাতুল ফেরদৌসকে বিক্রি করার অভিযোগে শিশুটির মা শামীমা আক্তারসহ (২৪) দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অঙ্কুর কুমার ঢাকা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তাদের কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটির বাবা শামীমাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
গ্রেপ্তার আরেক আসামি নুরুজ্জামান (৪৫) নরসিংদীর পলাশ উপজেলার কাজীরচর গ্রামের বাসিন্দা। এ সময় মামলার আরেক আসামি ফজিলা বিবি (৪৫) পালিয়ে যায়।
মামলার বাদী ও শিশুটির বাবা জাহিদুল ইসলাম জানান, বগুড়া সদর উপজেলার নামুজা পাল্লাপাড়া এলাকার শামীমা আক্তারকে ২০১৯ সালে বিয়ে করেন তিনি। ২০২০ সালে জান্নাতুলের জন্ম হয়। ছয় মাসের জান্নাতুলকে তার মায়ের কাছে রেখে নরসিংদীতে চলে যান তিনি। এরপর গত ১২ জুন বাড়িতে যেয়ে স্ত্রী ও মেয়েকে অনেক খুঁজেও পান না। শামীমার মোবাইল ফোনও এ সময় বন্ধ ছিল।
তিনি জানান, এভাবে দুই মাস হয়ে গেলেও তাদের না পেয়ে গাজীপুর আদালতে একটি মামলা করেন তিনি। পরবর্তীতে আদালত শ্রীপুর থানা পুলিশকে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলে শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) মানব পাচার দমন আইনে মামলা হয়।
জানা যায়, স্বামীর অনুপস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের পরামর্শে কোলের শিশুকে বিক্রি করার পরিকল্পনা করেন শামীমা। এবং ৫ লাখ টাকায় বিক্রিও করে দেন।
এ বিষয়ে মামলার অপর আসামি নুরুজ্জামানের স্ত্রী জানান, জান্নাতুলকে নিয়ে শামীমা হোটেলে কাজ করার সময় শিশুর কান্না শুনে নুরুজ্জামান তাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করত। আমাদের ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবনে কোনো সন্তান ছিল না তাই পাঁচ লাখ টাকায় লিখিত স্ট্যাম্প (দলিল) করে জান্নাতুলকে আমাদের কাছে বিক্রি করে দেয় শামীমা।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অঙ্কুর কুমার বলেন, মামলা হওয়ার পর শিশুটির বাবাকে সঙ্গে নিয়ে গত রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে নরসিংদী পলাশ উপজেলার কাজীরচর গ্রামে নুরুজ্জামানের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার এবং শিশুকে উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে শিশুর মা শামীমা আক্তার বগুড়া থেকে শ্রীপুর এলে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে শ্রীপুর বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসআই আরও জানান, দুপুরে আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
মতামত দিন